বাগেরহাটের মোংলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সেই তিন যুবকের পরিবারে আর কোন ছেলে সন্তান নেই। ওই তিনজনই ছিলো পরিবার তিনটির একমাত্র ছেলে সন্তান। নিহতদের মধ্যে জুবায়ের হোসেন সাকিব(১৯) মোরেলগঞ্জের বাদুরতলা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা মো. আসাদ হাওলাদার সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের নকল নবিস। গত বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মোংলার মৌখালী ব্রিজের কাছে বিদ্যুতের খাম্বার সাথে ধাক্কা লেগে মোটর সাইকেলের ৩ আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
নিহত সাকিবের একটি মাত্র ছোট বোন রয়েছে। নাম শাহারা আক্তার(৬)। সাকিবের অপর পাঁচ চাচার ঘরেও আর কোন ছেলে সন্তান নেই। এ ছাড়া নিহত সাকিবের মামাতো ভাই বায়জিদ ও জাকারিয়াও ছিলো তাদের সংসারের একমাত্র ছেলে সন্তান। মোংলায় মামাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে মামাতো ভাই বায়জিদের সাথে মেলা দেখতে যান সাকিব। সাথে চড়েন বায়জিদের দোকানের কর্মচারী জাকারিয়াও(২২)। বায়জিদ নিজে চালাচ্ছিলেন তার নতুন সিবিজেড মোটর সাইকেল।
নিহত সাকিব ২০১৯ সালে মোরেলগঞ্জ এসিলাহা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগ থেকে ৪.৮৫ নম্বর পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। ২০২১ সালে সরকারি এসএম কলেজের কারিগরি বিভাগ থেকে ৪.৬৮ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকপাশ করেন। নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সাকিব ইঞ্জনিয়ার হতে চেয়েছিলেন। কোন কলেজে ভর্তির জন্য রোববার (১২ মার্চ) খুলনায় যাওয়ার কথা ছিলো তার। কিন্তুু সবকিছু মাটি হলো দ্রুতগতির মোটর সাইকেলে।
মা সুরমা বেগম বলেন, সাকিবের কোন বাড়তি চাহিদা ছিলোনা। কখনো ২০ টাকার বেশি সে চায়নি। মোংলায় যাবার সময় ৪টি কবুতর বিক্রি করে খরচের টাকা জোগাড় করেছিল। বুধবার ফোনে সে বলেছিল, ‘মা, চিন্তা করোনা আমি বৃহস্পতিবার আসবো’। বৃহস্পতিবার এল তার মৃতদেহ। সাকিবের ছোট বোন শাহারার প্রশ্ন, ভাইয়া সাড়া দিচ্ছেনা কেন?
শোকাহত পরিবারের সদস্যরা কোন অবস্থাতেই বুঝতে চাচ্ছেননা যে, বেপরোয়া গতি ক্ষমা করেনি তাদের স্বজনদেরকে।