ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় নাপা সিরাপ খেয়ে দুই সহোদরের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু করেছে
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি। রোববার (১৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে
১২টায় আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে
গিয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওই দুই শিশুর স্বজনদেন সাথে কথা
বলে।স্বাস্ত্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ রোববার ও শুরু
করেননি।
ঔষধ প্রশাসনের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ওষুধ
প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আকিব হোসেন। তার সঙ্গে অধিদপ্তরের
উপ-পরিচালক নাইম গোলজার,মো.শফিকুল ইসলাম,সহকারী পরিচালক
মো.নাইম গোলজার,মো.রাজিবুল হাবিব এবং পরিদর্শক নাহিয়ান
আলম সাথে ছিলেন।
তদন্ত কমিটি মৃত দুই শিশুর মা লিমা বেগম ও চাচা উজ্জ্বল মিয়া ও দাদি
লিলুফা বেগমের সাক্ষ্য নেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ তদন্ত কমিটির প্রধান ডা.
আকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, যে সিরাপটি নিয়ে
অভিযোগ উঠেছে, সেটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একই ওষুধের অন্যান্য ব্যাচের ওষুধ সংগ্রহ
করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুদের স্বজনরা জানিয়েছে, ওষুধ
খাওয়ানোর পরই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের সাথে
আলোচনা করা হবে। ওষুধটিতে কী এমন উপাদান ছিল- যেটি খাওয়ার
১০/১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করল- এটি আসলে রহস্যজনক বিষয়।
এই রহস্য উদঘাটন করতে হয়তো সময় লাগবে।
এর আগে গত ১০ মার্চ রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের
দুর্গাপুর গ্রামে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ ইয়াছিন খান (০৭) ও
মোরসালিন খান (০৫) নামে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন
স্বজনরা। মৃতরা দুর্গাপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক ইসমাঈল হোসেন
ওরফে সুজন খানের ছেলে। ইটভাটা শ্রমিক ইসমাঈল হোসেন ওরফে সুজন
খান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।তিনি সেিলটে একটি ইটভাটায় কাজ করেন।
ছেলেদের খবর পেয়ে ঘটনার দিন রাতে বাড়িতে চলে আসেন। ইটভাটা
শ্রমিক ইসমাঈল হোসেন ওরফে সুজন খান বলেন,আমার দুটি ছেলেই
চিল আমার স্বপ্ন।এরা একদিন বড় হয়ে বাবার কাজে সাহায্য করবে।এখন
আমার বেচে থাকার কোন অবলম্বণ রইল না।
এর আগে ইয়াছিন খান (০৭) ও মোরসালিন খান এর মা লিামা বেগমের
সাথে কথা বললে তিনি জানান,আশুগঞ্জ উপজেলা হাসাপতাল থেকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ১০টাকার টিকেট
কাটার পর কতর্ব্যরত ডাক্তার কোন চিকিৎসা না করেই বাচ্চাদেও বাড়িতে
নিয়ে আসতে বলে।অনেক করোজোর করলেও কোন চিকিৎসা দেয়নি
ডাক্তার অভিযোগ করেন লিমা বেগম।লিমা বেগম রোববার দুপুওে তার
বাড়িতে গেলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন,আশুগঞ্জ হাসপাতাল
থেকে অক্সিজেন দেওয়ার পর কিছুটা সস্থ হলে তাদের স্টমাক ওয়াশের জন্য
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদও হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে যাওয়ার পর ঔষধ
প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সামনে মা লিমা বেদম বলেন, টিকিট কেটে
ডাক্তারের কাছে গেলে ইর্মাজেন্সিরুমে শার্ট প্যান্ট পড়ে বসে থাকা
ডাক্তার বলেন,আপনার বাচ্চারা সুস্থ আছে বাড়িতে চলে যান।তারপরও
ইয়াসিন এবং মরসালিনের মা লিমা আরো বলেন,আমি নিজে ডাক্তারের
কাঝে অনেক অনুনঢ বিনয় করেিেছ আমার ছেলেদেও একটি দেখার
জন্য।তারপরও তিনি রা দেখে আমাকে বাচ্চাদেও নিয়ে চলে যেতে বলেন।এরপর
আমি চলে আসি।চলে আসার পর পথে আমার ছোট ছেলে মারা যায় এবং
বড় ছেলে মারা যায় বাড়িতে। এ ব্যাপারে ঘটনার দিনে কতর্ব্যরত ডাক্তার
মো.সোলঅইমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন,আমার সাথে বাচ্চার
মা-বাবা কারোর সাথে খথার হয়নি। যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা
মিথ্যা।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদও হাসপাতালের দদ্ববধায়ক ডাক্তার
মো.ওয়াহিদুজ্জামান বলেন,সদও হাসপাতালে দালাদেও দৌরাত্ব আছে তবে
তার ¦াগের তুলনায় কম।আমরা চেষ্টা করছি দালাল মুক্ত করতে।তবে একেবারে
মুন্যের কোটায় আনতে পারব কি না তা বলতে পারছিনা।তিনি আরো
বলেন,আশুগঞ্জে দুই বাচ্চা সত্যি কি কারণে মারা গেছে তা ভিসেরা
রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিটিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে আগামী তিন কার্যদিবসের
মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির বাকি দুই সদস্য
হলেন- কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর
সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন।এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
তিন সদস্য রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত তদন্ত করতে আশুগঞ্জে ঘটনাস্থলে
আসেননি। এই বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
পরিচালক তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. মহিউদ্দিনের সাথে ফোনে কথা বললে
তিনি ফোনে বলেন, তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমার কমিটিকে
রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।রোববার প্রথমদিন।আরো দুইদিন
বাকি আছে কর্মদিবসের।এই দুইদিনের মধ্যে তিনি তদন্ত শেষ করে
রিপোর্ট জমা দিতে পারবেন বলে তিনি জানান। কবে নাগাদ তদন্ত করতে
ঘটনাস্থলে আসতে পারেন এই বিষয়টি বলতে রাজি হননি।