ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় প্রাণ হারানো বাংলাদেশি প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের লাশ বরগুনার বেতাগীতে তাঁর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০ টায় হাদীসুরের বাড়ীর পেছনের মাঠে জানাজা শেষে সকাল পৌনে এগারটায় তাঁর দাফন কাজ সম্পন্ন হয়। তাঁর এ মর্মান্তিক মৃত্যুর ১৩ দিন পরেও বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম।
নিহতের লাশ একনজর দেখতে উপজেলার ও তার আশপাশের এলাকা আগত হাজার হাজার লোক ভিড় জমায় ও ঢল নামে গ্রামের বাড়িতে। হাদীসুরের লাশ উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে আসছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় সোমবার দুপুর থেকেই বাড়িতে থাকে মানুষ। সোমবার রাত ঠিক ৯ টা ৪৩ মিনিটের সময় স্বজনরা ঢাকা থেকে লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে করে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে তার পিতা মাতা আত্মীয়স্বজন হাদীসুরের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে, আহাজারি করতে থাকেন। হাদীসুরের বিভিন্ন স্মৃতি উল্লেখ করে বিলাপ করতে থাকে।
এসময় তার মা রাশিদা বেগম, বাবা আবদুর রাজ্জাক ও ভাই তরিকুল ইসলাম, গোলাম মাওলা প্রিন্স ও বোন সানজিদা বেগম একাধিক বার সজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। বোমায় পুড়ে মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে যাওয়ায় কাফিন খুলে লাশ দেখানো হয়নি কাউকে। তবে তার লাশ দেখতে না পারায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন পরিবারের সবাই। এ মৃত্যুকে যেন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না তাঁরা। তবুও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিহত হাদীসুরের স্বজনদের শান্তনা দেবার চেষ্টা করেন।
জানাজায় অংশ নিতে ও নিহত প্রকৌশলী হাদীসুরের বাড়িতে তাঁর স্বজনদের শান্তনা দিতে আসেন বরগুনা-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
জানাজায় তার সহপাঠী, আত্মীয় স্বজন, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ, আইনজীবী, শিক্ষক,গণমাধ্যমকর্মি, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ইমামতি করেন হাদীসুরের চাচা মাওলানা মনিরুল ইসলাম।
এর আগে সোমবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে লাশ গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সুহৃদ সালেহীন। এ সময় বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান, সহকারি কমিশনার (ভ’মি) ফারহানা ইয়াসমিন, ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, পুলিশ সহ হাীসুরের স্বজন ও লাশ দেখতে আসা উজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।