বরগুনার তালতলীতে উচ্ছেদের ছয় মাস পরে আবার নতুন ভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন প্রভাবশালীরা। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
জানা যায়, গত পাঁচ বছরে উপজেলার কচুপাত্রা বাজারের সংযোগ সড়কের পাশের সরকারি খাল ও খাস জমি দখল করে ১২৩ টি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। দোকানঘর ও ইমারত নির্মাণ করার কারণে সংকুচিত হয়ে নব্যতা কমে গিয়ে ভরাট হয়ে যায় খালটি। নব্যতা কমে যাওয়ার কারণে খালে নৌকা চলাচল ব্যহত হয়। খালের নব্যতা ফিরি পেতে জেলা প্রশাসন খাল ও খাস জমি অবৈধভাবে দখল মুক্ত করতে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। উচ্ছেদ অভিযানে ওই খাল ও খাস জমিতে গড়ে ওঠা পাকা-আধাপাকা মিলে ১২৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তানভীর আহম্মদ ঘর উচ্ছেদ করে খাল ও খাস জমি দখল মুক্ত করেন। এতে কিছুটা স্বাভাবিক গতি ফিরে পায় খালটি। ঘর উচ্ছেদের ছয় মাস পরে গত ৮ মার্চ থেকে আবারও ওই খাস জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। ৭ দিন ধরে চলছে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে জাহিদ মিয়া, হাসান খাঁন, কামাল ফকির, হানিফ মাষ্টার, সেরাজ মাষ্টার ও লিটন প্যাদা ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। আবার কেউ কেউ তাদের পূর্বের চিহ্নিত স্থানে ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
খোজ নিয়ে জানা গেছে ওই ঘরগুলো অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ঘর নির্মাণে সরকারী কোন নির্দেশনা নেই। অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের বিষয়টি তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেনকে জানানো হলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে অবৈধঘর নির্মাণ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি এমন অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের।
স্থানীয় শহীদুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ ও আশ্রাব আলী বলেন, খাল দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা ছয় মাস আগে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করে দেয়। বর্তমানে আবার সেই জমিতেই স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। অবৈধ স্থাপনা পূন-নির্মাণের বিষয়টি তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেনকে অবহিত করেছি। কিন্তু তিনি অজ্ঞাত কারণে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা আরও বলেন, কচুপাত্রা খালের পাড়ে ঘর নির্মাণ করা হলে খাল দখল দুষনে পরিনত হবে। দ্রুত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবী জানিয়েছেন তারা।
অবৈধ দখলকারী মোঃ জাহিদ মিয়া বলেন, ঘর নির্মাণের কাজ শেষ করেছি কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের কেউ তো কিছুই বললো না। আরেক দখলদার হাসান খান বলেন, উচ্ছেদের সময় প্রশাসন আমার ঘরের একটি বেড়া খুলেছিল। ওই বেড়াটা নির্মাণ করেছি।
কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন আগে খবর পেয়ে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন যারা আবারো ঘর নির্মাণ করছেন তাদের ঘরও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হোসেন এর ফোন দিলে তিনি তালতলীর কোন সাংবাদিকদের ফোন রিছিপ করেননা। তবে আমতলী উপজেলার জনকন্ঠের প্রতিনিধির কাছে বলেন, দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। ওই উচ্ছেদ স্থানে যদি কেউ ঘর নির্মাণ করে থাকে তাহলে তার ঘর আবারো উচ্ছেদ করা হবে। তিনি আরো বলেন, সরকারী খাস জমিতে কাউকে ঘর নির্মাণের অনুমতি দেয়া হয়নি।