খুলনার ডুমুরিয়ার রুদাঘরা গ্রামে চরিত্রহীন নেশাখোর স্বামীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় স্বামী-শশুরের হাতে এক গৃহবধু মারপিট ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভূক্তভোগী গৃহবধু শারমিন খাতুন কে শনিবার উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রুদাঘরা গ্রামের গরুর ব্যাপারি শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে দুশ্চিরত্র নেশাখোর আলামিন বিশ্বাসকে গত বৃহস্পতিবার রাতে তার স্ত্রী শারমিন খাতুন(২১) নেশা করতে বাঁধা দেয়ায় তাকে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজসহ বেদম মারপিট ও নির্যাতন করে।
একপর্যায়ে শারমিন নির্যাতন সইতে না পেরে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে তার দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসার উদ্যোগ নেয়। বিষয়টি জানতে ও বুঝতে পেরে শারমিনের শশুর শহিদুল বিশ্বাস রুদাঘরা কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে পিচের রাস্তার উপর ফেলে শারমিনের চুল ধরে বেদম মারপিট ও পা দিয়ে সমস্ত শরীরে এলোপাথাড়ি লাথি ও পাড়া দেয়। এতে তার ডান কানের লতি ছিড়ে যাওয়াসহ সমস্ত শরীর নীলা ফোলা ও রক্তাক্ত জখম হয়। স্হানীয় লোকজন শারমিন কে উদ্ধার করে স্হানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করিয়ে তার বাপের বাড়িতে সংবাদ দেয়। পরে শারমিনের পরিবার তাকে বাড়িতে এনে শনিবার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খরসঙ্গ গ্রামের মোঃ আনারুল মোড়লের মেয়ে শারমিনা খাতুনের সাথে ২০১৮ সালে পার্শ্ববর্তি রুদাঘরা গ্রামের গরুর ব্যাপারি শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে আলামিন বিশ্বাস(২৮) এর ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শারমিন জানতে পারে তার বেকার স্বামী একজন নেশাখোর এবং দুশ্চরিত্র বান লোক।
একপর্যায়ে শারমিন তার স্বামীকে সু-পথে ফেরাতে এবং বেকারত্ব লাঘবে ২০১৯ সালে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী নেয়।
সেখানে থাকা অবস্হায়ও স্বামী নেশা করা অব্যহত রাখে এবং শারমিনের সাথে প্রায়ই ঝগড়া ঝাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে শারমিন চাকুরী ছেড়ে স্বামীকে নিয়ে গ্রামে শশুরবাড়ি ফিরে আসে।বর্তমানে তাদের দাম্পত্ত জীবনে রাফিয়া নামে দেড় বছর বয়সী একটি কন্যাশিশু রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল বিশ্বাস শারমিন কে মারপিটের কথা স্বীকার করে জানান, বৌমাকে আমি অত্যধিক স্নেহ করি। কিন্তু সংসারে প্রায়ই ওদের ঝগড়া ঝাটি দেখে আর বৌমার রাগ করে বাপের বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা শুনে আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে শাসন সুলভ মনোভাব নিয়ে তাকে মেরেছি। আসলে মারাটা আমার ভুল হয়েছে।তিনি আরো জানান,আলামিন এখন নেশামেশা করেনা। ভাল হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শারমিন খাতুনের মা পারভীন নাহার বলেন, আমার মেয়েকে প্রায়ই ওর শশুরবাড়ির লোকজন মারপিট ও নির্যাতন করে। আমরা অনেক ধর্য্য ধরেছি।এবার আইনগত ব্যবস্হা নিবো।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওবাইদুর রহমান বলেন,বিষয়টি শুনেছি।তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।