কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মৌকারা ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামের বাহরাইনে মৃত্যু হওয়া ইসহাক মিয়া নামে এক রেমিটেন্স যোদ্ধার কন্যা ও স্ত্রী’র জমি জবর দখল ও বাড়ী ঘরে হামলা ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা ইসহাক মিয়ার মেয়ে মাহমুদা ইসরাত শিরিন, স্বামী মমিনুল ইসলাম ও তার ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু কন্যা সুমাইয়া ইসলাম মাইমুনার উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আহত করে। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইসহাক মিয়ার ভাই আবদুর রাজ্জাক, তার স্ত্রী রাহেলা বেগম, ছেলে শাহ জালাল সাজু, সাজুর স্ত্রী পূর্ণিমা, ও আবদুর রাজ্জাকের অপর পুত্র বধূ স্মৃতি বেগমকে আসামি করে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগী মাহমুদা ইসরাত শিরিন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নাঙ্গলকোট থানা উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন খন্দকার সঙ্গীয় ফোর্স।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর আলিয়ারা গ্রামের আশোক আলীর ছেলে এসহাক মিয়া গত ২০ বছর পূর্বে বাহরাইনে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। ইসহাক মৃত্যুর সময় স্ত্রী ও ২ মেয়ে রেখে যান, পরে দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাভাবে এক মেয়ের মৃত্যু হয়। অর্থাভাবে বাহরাইন থেকে আনা হয়নি এসহাকের মরদেহটি। মৃত্যুর সময় এসহাক ১৮০ শতক সম্পত্তি রেখে যান, পরে ওই সম্পত্তির অধিকাংশ ইসহাক মিয়ার ভাই আবদুর রাজ্জাক, আবুল কাশেম, আবদুল মালেক ও তাদের ছেলেরা জোর পূর্বক দখল করে ফেলে। মৃত এসহাক মিয়ার কন্যা ও স্ত্রী নিরুপায় হয়ে এসহাক মিয়ার শ্বশুর বাড়ীতে বসবাস করে। পরে তারা স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে বাড়ীতে বসবাস শুরু করে। সর্বশেষ গত বুধবার সকালে ইসহাক মিয়ার ভাই আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে তার স্ত্রী, পুত্র ও পুত্র বধূরা মিলে মৃত এসহাক মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগমের বসত বাড়ীর টিনের ভাউন্ডারী ভাংচুর করে। এ সময় ইসহাক মিয়ার মেয়ে মাহমুদা ইসরাত শিরিন বাধা দিলে হামলাকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে, তার আত্মচিৎকারে স্বামী আবদুল মমিন এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। শিরিনের ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু কন্যা সুমাইয়া ইসলাম মাইমুনাকেও মারপিট করে বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে মাহমুদা ইসরাত শিরিন বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর পর বাড়ী ও দু’টি ভিটি মিলে ৩৫ শতক সম্পত্তি ছাড়া আমার বাবার সব সম্পত্তি আমার ৩ জেঠা ও তাদের ছেলেরা দখল করে ফেলে।
এছাড়া গত বুধবার তারা আমাদের বাড়ী ঘর ভাংচুর করে এবং আমি, আমার স্বামী ও কন্যাকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাক বলেন, তাদের এক শতক সম্পত্তিও আমাদের প্রয়োজন নেই। ঘটনার দিন তারা আমাদের উপর হামলা করলে আমরা প্রতিহত করি।
নাঙ্গলকোট থানা উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন খন্দকার বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।