কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই কাজী মো: শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ভূয়া প্রতিবেদন দিয়ে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই প্রতিবেদনের ফলে ব্যবসায়ী কামাল সরকার রোববার দুপুরে কুমিল্লার ৮ নম্বর আমলী আদালতে উপস্থিত হলে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ওমর ফারুক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কামাল সরকার আকুবপুর ইউনিয়নের বলিঘর গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার সর্বমহলে তোলপাড় চলছে এবং ভূয়া প্রতিবেদন দাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বলিঘর গ্রামের আবুল খায়ের মজিবের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে ২০২১ সালের ২২ নবেম্বর কুমিল্লার ৮ নম্বর আমলী আদালতে একই গ্রামের প্রতিবন্ধী মৃত আবদুল আলীমের ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু ইউসুফসহ ৫জনের বিরুদ্ধে একটি চাদাঁবাজির অভিযোগ করেন। বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিযাল ম্যাজিষ্ট্রেট বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। সরেজমিন কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই এসআই কাজী মো: শাহনেওয়াজ মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে আদালতে ভূয়া ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করে।
এ দিকে ভূয়া প্রতিবেদন দাতা এসআই কাজী মো: শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু ইউসুফ পুলিশের আইজি, সিকিউরিটি সেল, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করে। ওই অভিযোগটির তদন্ত চলছে।
অপর দিকে চাদাঁবাজির ওই অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রনোদীত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে জানান ইউপি সদস্য আতাউর রহমান, জামাল উদ্দিন, ফজলুর রহমান, আবু নাছের, ছিদ্দিকুর রহমান সরকার, মোহাম্মদ ওসমান ও মোহাম্মদ কাইয়ুমসহ এলাকার ৩৫/৪০ জন গন্যমান্য ব্যক্তি। তারা বলেন, মামলার বাদী সালমা আক্তারের স্বামী আবুল খায়ের মজিব ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু ইউসুফ চাচাতো জেঠাতো ভাই। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে মামলা মোকাদ্দমা চলছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু ইউসুফের ৪ শতক সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এ মামলাটি সাজানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ঘটনাটি হচ্ছে, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু ইউসুফের দখলকৃত জায়গা থেকে গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগে আবুল খায়ের মজিবসহ ৪ জন দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল। তারা আবু ইউসুফের জায়গায় যাবে না মর্মে অঙ্গীকার দিলে আদালত তাদেরকে জামিন দেয়। কিন্তুু জামিনে বের হয়েই আবুল খায়ের মজিব তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে দিয়ে হয়রানি করার জন্য পরিকল্পিত ভাবে আবু ইউসুফ, তার স্ত্রী জানু বেগম, নিকটাত্মীয় কামাল সরকার, আমজাদ হোসেন ও জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই মামলাটি দায়ের করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই কাজী মো: শাহনেওয়াজ বলেন, আমি শারিরিক ভাবে অসুস্থ্য। এ বিষয়ে মোবাইলে কিছু বলা যাবে না, পরে কথা বলব।
কুমিল্লা বারের অ্যাডভোকেট ও মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ তানভীর আহমেদ ফয়সাল বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। পুলিশের খামখেয়ালী ও গাফিলতির কারণে একজন নিরপরাধ ব্যবসায়ী কারাগারে যেতে হলো।