সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার হাওর রক্ষা বাঁধে বাঁধে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। উপজেলার কানলার হাওর ঘুরে কোথাও কাজ শেষের চিত্র দখো যায়নি বরং মাটি ভরাটের কাজ করতে দেখা গেছে বাঁধে বাঁধে। মঙ্গলবার হাওর বাঁচাও আন্দোলন বাঁধ পরিদর্শণে গেলে বাঁধ থেকে পালাতে থাকে পিআইসির লোক জন। বাঁধ পরিদর্শণ শেষে দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করার দাবিতে দোয়ারাবাজার উপজেলা কমপ্লেক্স এর সামনে আয়োজন করা হয় মানববন্ধনের। এর আগে সকালে উপজেলার ১নং পিআইসির মাটি ভরাট কাজ স্থলে আয়োজন করা হয় মানববন্ধনের।
বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে, 'হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের পিআইসি সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া যায়। সে সিন্ডিকেটের নাম এখলাস ফরাজী। প্রতিটি পিআইসিতে তাঁর নাম শোনা যাচ্ছে। অনেক পিআইসির সভাপতি ও সদস্য সচিব তাঁরা নিজেরাই তাদের পিআইসি সম্পর্কেই জানেন না। সবাই বলছেন এখলাস ফরাজীর নাম। যে বাঁধে মাটির কাজ চলছে সেটার সভাপতি হচ্ছেন সেই আলোচিত এখলাস ফরাজী। এখলাস ফরাজীর আত্মীয় স্বজনকে নিয়েই সাজানো হয়েছে কানলার হাওরের সকল পিআইসি।
হাওর পরিদর্শণ শেষে বিকেলে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ব্যানারে উপজেলা কমপ্লেক্স এর সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালীর পরিচালনা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা, জেলা কমিটির সাধারণ ওবায়দুল হক মিলন, আওয়ামী লীগ নেতা তাজুল ইসলাম, কৃষক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা দোয়ারাবাজার উপজেলার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'যেখানে ২৮ ফেব্রুয়ারি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা সেখানে কানলার হাওরের ১ নম্বর ও ৪৩ নং পিআইসির মাটির কাজ এখন শুরু হয়েছে। নীতিমালা না মেনে বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে কাদামাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব দেখোর যেন কেউ নেই। বক্তারা অভিযোগ করেন, অনেক জায়গায় অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মিত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পাউবোর কর্মকর্তারা নির্বিকার। বাঁধকে কেন্দ্র করে হাওরে এখলাস ফরাজী সিন্ডিকেট তৈরী করা হয়েছে। এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে পিআইসি। এটা দুর্নীতির সহজ একটি উপায়। এসবের জন্য তারা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটিকে দায়ী করেন। গত জেলা মিটিংএ জানানো হলো সকল বাঁধের মাটির কাজ শেষ আজ হাওরে এসে দেখা গেল এটা সম্পূর্ণ বাউতাবাজী। এখনও বাঁধে বাঁধে মাটি ভরাট চলছে। কোন বাধেই দুরমুজ করা হয়নি, স্লুপ ঠিক করা হয়নি। লোক দেখানো কয়েকটা দুর্বাঘাসের চাক বাঁধের ওপরে রাখা হয়েছে।
তারা বলেন, এবার কৃষকদের ফসলহানী ঘটলে দুর্নীতিবাজ আমলাদের লুটেরা বর্গীদের মতোন বিতাড়িত করা হবে।' প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।' এরআগে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে গিয়ে সুরমা ইউনিয়নের কানলার হাওরের বিভিন্ন ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ পরিদর্শন করেন এবং বাঁধে কাজ শেষ করার দাতিবে মানববন্ধন করেন।