ফরিদপুরে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এক দম্পতি গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। উদ্ধার করা হয়েছে জালিয়াতি করে নেওয়া টাকার বড় একটি অংশ।
এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ সুপারের কাযালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো: জামাল পাশা।
এটিএম কার্ডের মাধ্যমে জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ওই দম্পতি হলেন ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা বদরুল ইসলাম ওরফে তাসিন (৩৫) এবং তাঁর স্ত্রী মাহি আক্তার উর্মি (২৪)।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সদরপুর উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের রঞ্জন মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মুত লাল মিয়ার ছেলে কালাম ব্যাপারী (৫৬) সদরপুরের মনিকোঠা বাজারের ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর বাজার এজেন্ট আউটলেটের একজন গ্রাহক। কালাম ব্যাপারী তাহার হিসাব নম্বর ২০৫০৭৭৭০২৩৭৭৬৯২০৫ এর বিপরীতে এটিএম কার্ডের জন্য আবেদন করেন। ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর মনিকোঠা বাজার এজেন্ট আউটলেটের সাবেক কর্মচারী বদরুল ইসলাম তাসিন এটিএম কার্ড সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন গ্রাহক কালাম ব্যাপারীকে কার্ড সরবরাহ না করে তার স্বাক্ষর নকল করে এটিএম কার্ডটি নিজের কাছে রেখে দেন। পরবর্তীতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কালাম ব্যাপারীর বাড়ীতে গিয়ে বদরুল ইসলাম ফরিদপুর ট্রমা সেন্টারের ডিসকাউন্ট কার্ড রেজিষ্ট্রেশনের নাম করে কৌশলে কালাম ব্যাপারীর নিকট থেকে মোবাইল নিয়ে নিজের মোবাইলের সফটওয়ারের যুক্ত করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ওটিপি নিয়ে কালাম ব্যাপারীর এটিএম কার্ড এ্যাকটিভ করেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বদরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী ফরিদপুর শহরের হাইস্কুলের মার্কেট ও নতুন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের দুটি বুথ থেকে কালাম ব্যাপারী হিসাব থেকে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা তুলে নেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, পরবর্তিতে প্রতারিত কালাম ব্যাপারী পুলিশ সুপারের কাছে সহযোগিতা চান। পরে পুলিশের একটি সাইবার দল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের দক্ষিণ আলীপুরস্থা নিজ বাড়ি থেকে বদরুল ও তাঁর স্ত্রী মাহিকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক লাখ চার হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। অভিযানকালে
ওই দম্পতির মোবাইল ফোন, যে পোশাক পড়ে বুথে গিয়ে টাকা তুলেছিলেন পোশাকও জব্দ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) মো: এমদাদ হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রাকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে প্রতারিত কালাম ব্যাপারী বাদী হয়ে মঙ্গলবার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দয়রে করেন।
এই মামলাটি তদন্ত করছেন গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শত (এসআই) রাহুল অনিক।
রাহুল অনিক জানান, এ ঘটনায় ইসলামি ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা জড়িত আছে বলে এখন পর্ন্ত তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ওই দম্পতিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। যদি ওই দম্পত্তি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি না দেন তাহলে তাদের রিমান্ডের জন্য আবেদন জানানো হবে।