নওগাঁর মহাদেবপুরে মাদ্রাসার টয়লেটের ছাঁদ থেকে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দকরা সরকারি নতুন বই উদ্ধারের ঘটনা সঠিক নয়। ভোটের সময় সৃষ্ট শত্রুতার জের ধরে একজন ইউপি সদস্য এই গুজব ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বরং ১২০ বছরের পুরনো এই মাদ্রাসাটি এ পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনই অনুদান না পেয়ে শিক্ষক কর্মচারিরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার উপর তাদের উপর গুরুতর মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের বিনোদপুর দাখিল মাদ্রাসায় গেলে সহকারি সুপারিন্টেন্ডেন্ট আবদুর রউফ জানান, গত ১ মার্চ দুপুরে গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট মোবাইলফোনে অভিযোগ করেন যে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকরা বই বিতরণ না করে খোলা বাজারে বিক্রি করার অসৎ উদ্দেশ্যে মাদ্রাসার টয়লেটের ছাদে রাখা হয়েছে। ইউএনওর নির্দেশে বিকেলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মাদ্রাসা পরিদর্শন করে বইয়ের স্টক সঠিক পান। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পরদিন খবর বের হয় যে, বইগুলো জব্দ করা হয়েছে এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে করোনাকালিন মাদ্রাসা ছুটি থাকায় বইগুলো বিতরণ করা যায়নি। আর টয়লেটটি মাদ্রাসার বাইরে নয়, বরং সেটি অফিস ঘরের ভিতরেই ঘর সংলগ্ন। অফিস ঘরের টিনের ছাউনির নিচে টয়লেটের উপর বাঁশের মাচান ও মাটি দিয়ে জলছাদ বানানো হয়েছে। স্থান সংকুলানের অভাবে তার উপর বইগুলো রাখা হয়েছিল।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান করে জানান, বইগুলো উদ্ধার করা হয়নি। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। কারণ কোন কারণে এবছরের বই বিতরণ করা না গেলে বা বই বেঁচে গেলে সেগুলো অফিসে ফেরৎ দিতে হয়না। সেগুলো পরের বছর বিতরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রাখার বিধান রয়েছে।
উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার ফরিদুল ইসলামও একই কথা জানান। তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রকাশিক খবর সঠিক নয়। অসৎ উদ্দেশ্যে টয়লেটের ছাদে বই রাখার বিষয়টিও সঠিক নয়।
মাদ্রাসার সহকারি সুপার জানান, গত ইউপি নির্বাচনের সময় সরকারি দলের একজন মেম্বার প্রার্থী আবদুস সাত্তার মাদ্রাসার সামনে তার নির্বাচনী অফিস করেন। মাদ্রাসার নৈশ প্রহরি এতে বাধা দিলেও তিনি তা মানেন নি। ভোটের আগে তার অফিসটি কে বা কারা ভাংচুর করলে মেম্বার প্রার্থী এ ব্যাপারে নৈশ প্রহরির ছেলেকে দোষারুপ করেন। এরই জের ধরে তিনি এই মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। মেম্বার নির্বাচিত হবার পর তিনি মাদ্রাসার গাছ কাটাতেও বাধা দেন।
জানতে চাইলে মেম্বার আবদুস সাত্তার বলেন, ২০২২ সালের বই বিতরণ না করে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল। তবে আইনে দোষ না হলে তার কোন আপত্তি নাই। নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের বিষয় তিনি মনে রাখেননি বলেও জানান।