শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ওরফে আকাশ কিলিং মিশনের পর দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। হত্যার একদিন পর শুক্রবার তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য জয়পুরহাট সীমান্তে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবির) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানায়- হত্যার পাঁচদিন আগে তাকে কিলিং মিশনের কথা জানানো হয়। আর তিনদিন আগে জানানো হয় কাকে খুন করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নেতা টিপুকে হত্যার জন্য মাসুমের কাছে অস্ত্র ও মোটরসাইকেল সরবরাহ করা হয় গত বুধবার। তবে কে বা কারা অস্ত্র সরবরাহ করেন এবং ঘটনার নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কারা- এমন প্রশ্ন করলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, এ বিষয়ে এখনও বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
অভিযুক্ত মাসুমকে কীভাবে শনাক্ত করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে তারপর মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়ে বলেও জানা গেছে। এসব মামলায় বিষণ্ণ ছিলেন তিনি। তাকে কেউ প্ররোচণা দিয়ে কিলিং মিশন সম্পন্ন করেছে কি-না তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। মো. মাসুম ওরফে আকাশ গ্রাফিক আর্টস ও ডিজাইনে পড়াশুনা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার বাবা স্কুল শিক্ষক এবং মাসুম বিবাহিত বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, এর আগে শাহজাহানপুরে জোড়া খুনে জড়িত ওই শুটারকে শনাক্ত করা হয়। এর পরই তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে একাধিক টিম মাঠে নামে। পুলিশের দাবি, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা ঘটনার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত যে নেটওয়ার্ক কাজ করেছে সে বিষয়ে ধারণা পেয়েছেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম টিপু। একই ঘটনায় নিহত হন যানজটে সড়কে আটকে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি। গুলিতে টিপুর গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্নাও আহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।