কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাব-রেজিষ্ট্রি দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে এই উপজেলার লক্ষাধিক জনগণ। জেলার ৬’টি উপজেলার মধ্যে ভৌগলিক কারণে দৌলতপুর উপজেলাটি আয়তন অনেক বড় এবং জনসংখ্যায় বেশি। বিগত সময়ে প্রতি মাসে দেড় হাজারেরও বেশি দলিল রেজিষ্ট্রি হয়েছে এই অফিসে। অফিসটি বন্ধ থাকায় জমাজমি ক্রেতা ও বিক্রেতা ভোগান্তির স্বীকার হওয়াসহ সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
জানাযায়, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়া’র উপ-পরিচালক জাকারিয়ার নেতৃত্বে দুদকের একটি অভিযানিক দল দৌলতপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে গত ২৬শে জানুয়ারী অভিযান চালায়। প্রায় ৫ঘন্টা চালানো এ অভিযানে হিসাব বর্হিভূত ৩ লক্ষ ১ হাজার ২০০ টাকাসহ অফিস সহকারী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীকে আটক করেন।
সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস সূত্রে জানাযায়, ঘটনার দিন ৩১৬টি দলিল রেজিষ্ট্রি প্রক্রিয়াধীন ছিল। সেসকল দলিলের টাকা অফিস সহকারী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নীর হেফজতে ছিল। পরবর্তীতে রশিদ কেটে টাকাগুলো সরকারী কোষাগারে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন ৩১৬টি দলিল রেজিষ্ট্রি সংক্রান্ত সমস্থ কাগজপত্রসহ ৩ লক্ষ ১ হাজার ২০০টাকা জব্দ দেখায়। আর সেই থেকে বন্ধ হয়ে আছে এই অফিস ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারন মানুষ।
ভুক্তভোগী শশীধরপুর গ্রামের জমি বিক্রেতা রঞ্জিত আলী জানান, আমি ব্যবসায় খতিগ্রস্থ হয়ে অনেক টাকা ঋনি হয়ে গেছি। জমি বিক্রি করে সেই ঋণ পরিশোধ করবো। কিন্তু রেজিষ্ট্রি অফিস বন্ধ থাকার কারণে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে পারছি না। এদিকে পাওনাদার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই মূহুর্তে আমি খুব বিপদে আছি।
একইভাবে আরেক ভোক্তভোগী গোপিনাথপুর গ্রামের ইয়াদ আলী বলেন, আমি জমি বিক্রি করতে না পারার কারণে টাকার অভাবে আমার বাবাকে চিকিৎসা করাতে পারছিনা।
দৌলতপুর উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন বলেন, রেজিষ্ট্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় ৬ হাজারের বেশি দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার অপেক্ষায় আছে। তিনি আরোও বলেন, দৌলতপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের ১৩৭ জন দলিল লেখকসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই বেকার অবস্থায় সময় পার করছে। খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তাহলেই ক্যাবল ভুক্তভুগীরা সুফল পাবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে গত ২০শে ফেব্রুয়ারী দৌলতপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে যোগদান করেন সাব-রেজিষ্ট্রার মোঃ আনোয়ার হোসেন তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, যোগদানের পর থেকে তিনি অন্যান্য কার্য্যক্রম চালু রাখলেও বাদ্ধ্যবাদকতার কারণে রেজিষ্ট্রি কার্য্য করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।