কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের খোশারপাড় পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের আলী আশ্রাফ ভূইয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে মসজিদের মোতয়াল্লী নুরুল ইসলামের ভাতিজা নাজমুল আলম সুমন বাদী হয়ে ওয়াকফ এস্টেট’সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খোশারপাড় গ্রামের মৃত ফেজীবিবি ১৯১৬ সালে রেজিষ্ট্রিকৃত কবুলিয়ত মূলে ৪০৫,৩৬৭ ও ৩৭১ দাগে ১৩২ শতক সম্পত্তি মালিক ছিলেন। ফেজীবিবি পরে মৌখিক ভাবে খোশারপাড় পূর্ব পাড়া জামে মসজিদে ওই ১৩২ শতক সম্পত্তি দান করে এ সম্পত্তির আয় দিয়ে মসজিদের ব্যয় ভার বহন করতেন। ফেজীবিবি মৃত্যুকালে ছেলে আরব আলী ভূঁইয়া, আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া, আবদুল আজিজ ভূঁইয়া ও দুই কন্যা রেখে যান। ফেজীবিবি মৃত্যুর পূর্বে তিনি তার ছেলে আবদুল আজিজকে ওই মসজিদের মোতয়াল্লি নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে আবদুল আজিজের পুত্র আলী আশ্রাফ ভূঁইয়া নিজ নামের এস.এ ও বি.এস খতিয়ানে মসজিদের ৬৬ শতক সম্পত্তি অর্ন্তভূক্ত করেন এবং তিনি ওই সম্পত্তি চাষাবাদ করে মসজিদের খরচ বহন করতেন। আলী আশ্রাফ ভূঁইয়ার মৃত্যুর পর মসজিদের মোতয়াল্লি নিযুক্ত হন তার ছেলে নূরুল আলম ভূঁইয়া। পরে নূরল আলম ভূঁইয়া ৭ মার্চ ২০১০ সালে ২৩২৩ নং ওয়াকফ নামা দলিলে ৬৬ শতক সম্পত্তি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে ওই দলিলে ছেলে নাজমুল আলম সুমন ভূঁইয়াকে মোতয়াল্লি হিসেবে উল্লেখ করে তার উপর দায়িত্ব ভার অর্পণ করেন। এরপর থেকে আলী আশ্রাফ ভূইয়ার অপর ছেলে নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ওই সম্পত্তির ৩৩ শতক সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে।
মসজিদ সভাপতি হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, সেক্রেটারি আবদুল মতিন ভূঁইয়া, সমাজ সেবক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ও বজলের রহমান বলেন, মসজিদের ১৩২ শতক সম্পত্তির মধ্যে আলী আশ্রাফ ভূঁইয়া ৬৬ শতক, ডাঃ আলী আক্কাছ ভূঁইয়ার ছেলে রুহুল আমিন ভূঁইয়া ৩৩ শতক ও আলী নোয়াব ভূঁইয়ার ছেলে মৃত মাস্টার আবুল খায়ের ভূঁইয়া ৩৩ শতক নিজেদের নামে খতিয়ান করে চাষাবাদ করেন। জমি গুলো চাষাবাদের আয় দিয়ে মসজিদের ব্যয় ভার বহন করেন। কিন্তু আলী আশ্রাফ ভূঁইয়ার ছেলে নূরুল আলম ভূঁইয়ার ওয়াকফকৃত ৬৬ শতক সম্পত্তির মধ্যে নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ৩৩ শতক দখল করে রেখেছে। যার ফলে মসজিদ পরিচালনায় বিঘœ ঘটছে।
অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমি মসজিদের কোন সম্পত্তি দখল করিনি। আমার দাদা আবদুল আজিজ ভূঁইয়ার এস.এ ও আমার পিতা আলী আশ্রাফ ভূঁইয়ার বি.এস মূলে ওয়ারিশ হিসেবে আমি মালিক দখলকার আছি। কবুলিয়ত, সি.এস, এস.এ ও বি.এস খতিয়ানে এ সম্পত্তি আমাদের। এখানে মসজিদের নামে কেউ কোন দলিল উপস্থাপন না করে জোর পূর্বক আমার সম্পত্তি দখলের পায়তারা করছে। তাছাড়া, আমার ভাই মরহুম নুরুল আলম ভূঁইয়া তার ছেলে নাজমুল আলম সুমনকে মোতয়াল্লি করে ৬৬ শতক সম্পত্তি মসজিদকে কবলা দিয়েছে। ৬৬ শতক সম্পত্তিতে আমরা ২ ভাই ২ বোন মালিক, সে হিসেবে তিনি কবলা দিতে পারেন ২২ শতক। আমার ও বোনদের সম্পত্তিতে অবৈধভাবে মসজিদকে কবলা দিয়ে তিনি বির্তকের সৃষ্টি করেছেন।