ফরিদপুরে বেপরোয়া গতির মাটি টানা ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে মেধাবী এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের দীঘিরপাড় মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই শিক্ষর্থীর নাম শেখ নাঈম (১৩)। সে গেরদা এ.এফ.মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। স্কুল শেষে বাই সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সামনের দিক থেকে আসা মাটিভর্ একটি ট্রাকক্টর তাকে চাপা দিলে সে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
নাঈম ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা দিন মজুর শেখ সেকেনের ছেলে।
নিহত নাঈমের চাচাতো ভাই নাজমুল হাসান বলেন, দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই মেডিকেল এসিসটেন্স কুল থেকে মেডিকেল ডিপ্লমা পাশ করে বর্তমানে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্ণি করছেন। তিনি বলেন, নাঈমের ইচ্ছে ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। তিনি বলেন নাঈমের আর প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না। নাঈম আর সাইকেল চালিয়ে বই নিয়ে স্কুলে যাবে না।
ঘটনার পর গ্রামবাসী চালক ও ট্রলিটি আটক করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় ওই সময় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে উঠে ও চালককে মারধর করে। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে পুলিশ ঐ চালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
গেরদা এ.এফ.মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, স্কুল বেলা ১ টায় ছুটি দিয়ে দেই। এর ১৫ মিনিট পরই খবর আসে আমার এক ছাত্র ট্রাক্টর চাপায় মারা গেছে। দ্রুত সেখানে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেবার চেষ্টা করি। উত্তেজিত জনতা চালককে আটক করে বেধরক পিটিয়েছে। এ সময় আমি ইউএনও এবং পুলিশ কে খবর দেই।
তিনি আরো বলেন, ঐতিহ্যবাহী গেরদা দিঘির মাটি বিক্রি করা কয়েকদিন ধরে ধরেই এলাকায় বেপরোয়া ভাবে ট্রাক্টর চলাফেরা করছিল। বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচলের বলি হল আমারা স্কুলের মেধাবী ছাত্র।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, খবর পেয়ে জনতার হাত থেকে ওই চালককে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকের কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চালকের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ট্রাক্টরটিকে জব্দ করা হয়েছে। আর নিহত ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, স্থানীয় জনতা সেখানে খুবই ক্ষিপ্র হয়ে উঠিছিল। তাদের শান্ত করতে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আমি ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে ঐ ছাত্রের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করবো।