নওগাঁর মান্দায় প্রতিবেশীদের হুমকির মুখে চরম অসহায় জীবন-যাপন করছেন এক ব্রাক্ষ্মণ পরিবার। এ পরিবারের বসতভিটার জমি জবরদখল করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী পরিবার বসতভিটার জমি জবরদখল ঠেকাতে কল দেন ৯৯৯ নম্বরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।
এরপর থেকে তাঁদের হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্রাক্ষ্মণ পরিবারটি। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার মান্দা থানায় অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী (৬৫)। তিনি উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী রঞ্জনা রানী (৫০), মেয়ে প্রতিমা রানী নুপুর (২২) ছেলে রবিন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রানা (১৩) ও বিধবা বোন মায়া রানীকে (৬৭) নিয়ে তাঁর সংসার। পূজা-অর্চনা থেকে প্রাপ্ত আয় দিয়ে চলে ভুমিহীন এ পরিবারের যাবতীয় খরচ।
ভুক্তভোগী কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, প্রায় ৭০ বছর ধরে এ জমিতে আমরা বসবাস করছি। কিন্তু জমিটি প্রতিবেশী কয়েকজন মুসলমান তাঁদের বলে দাবি করে বারবার দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বাধার মুখে টিনসেডের বাড়িটি সংস্কার করতে পারছি না। বর্তমানে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বাড়িটি।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি অমূল্য কুমার প্রামানিক জানান, নগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ১৯৬৪ সালে ভারতের মালদহ জেলায় চলে যান। এরপর বিনিময় সূত্রে প্রতিপক্ষ কছিম উদ্দিন শেখ ও সুফিয়া বিবি গংরা নগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সম্পত্তিতে বসবাসসহ ভোগদখল করেন। কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তীর বসতভিটার ১৬ শতক জমি নগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি করে মাঝে মধ্যেই তা জবরদখলের চেষ্টা করছেন প্রতিপক্ষ কছিম উদ্দিন শেখ ও সুফিয়া বিবি গংরা। প্রতিপক্ষের বাধা ও হুমকির কারণে অসহায় পরিবারের টিনসেডের বাড়িটি সংস্কার করতে পারছে না। চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে তাঁদের।
প্রতিবেশী হেমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, দাদু বলদেব চক্রবর্তী তাঁর মেয়ে প্রমীলা চক্রবর্তীর জামাতা শ্যামাপদ চক্রবর্তীকে ১৯৫৮ সালে ঘরজামাই হিসেবে এনে বসতবাড়ি সংলগ্ন জমিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে দেন। সেই থেকে শ্যামাপদ চক্রবর্তী পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে বসবাস করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে ২০০৮ সালে মারা যান তিনি। বর্তমানে শ্যামাপদ চক্রবর্তীর ছেলে কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তীসহ পরিবারের পাঁচজন সদস্য সেখানে বসবাস করছেন।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের কছিম উদ্দিন শেখ বলেন, কার্তিক চন্দ্রের দখলে থাকা জমির প্রকৃত মালিক নগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। যা বিনিয়ম সূত্রে আমরা পেয়েছি। আমরা সেটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
মান্দা থানার সহকারী উপপরিদর্শক আবদুল লতিফ বলেন, ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার থানার একটি অভিযোগ করেছেন। দুইপক্ষকে নিয়ে বসে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।