চৈত্রমাসে আষাঢ়ে বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। বিশেষ করে শাকসবজি চাষিরা এই বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। এছাড়াও পাট, ভূট্টাসহ নিন্মাঞ্চলের বোরো আবাদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। গেল বৃহস্পতিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত থেমে থেমে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে কুড়িগ্রামের সবকটি উপজেলায়। কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষণ মোতাবেক জেলায় ১লা এপ্রিল শুক্রবার ভোর থেকে ৪ এপ্রিল সোমবার ১০টা পর্যন্ত ১৭১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জেলার কিছু কিছু এলাকায় আবারও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
টানা চার দিনের বৃষ্টিপাতে নাগেশ্বরী উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে খাল বিল, নদী নালা। ডুবেছে নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান। চরাঞ্চলের ভূট্টা আবাদের কিছুটা ক্ষতি হলেও পুরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সদ্য চাষ করা পাট। ক্ষেত চাষ করে পাটবীজ বোনার পরপরই বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে ওইসব ক্ষেত। ফলে বীজ অঙ্কুরোগদম হওয়ার আগেই পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। অপরদিকে চলতি মৌসুমের চাষকৃত বেগুন,পটল, লাউ, চালকুমড়া, শশা, টমেটো, বিভিন্ন প্রকার শাকসহ রসুন, পেয়াজ ও মরিচের আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং বৃষ্টির পানি জমে এসব সবজির গাছ মরে যাচ্ছে। মসলা শাক জাতীয় ফসল ক্ষেতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের বেগুনীপাড়ার সবজি চাষি আলতাফ হোসেন জানান, অতি বৃষ্টির ফলে তার দুই বিঘা জমির বেগুন গাছ নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া চালকুমড়ার গাছও মড়ে যাচ্ছে। কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের কৃষক কুদ্দুস মিয়া জনান, তার আধাবিঘা পেয়াজ ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে তাই পরিপক্ক হওয়ার আগেই তুলতে হয়েছে। একই এলাকার আবদুল কাদের বলেন, চৈত্রমাসের এমন বৃষ্টি প্রায় দুইযুগ দেখেননি তিনি। এই বৃষ্টিতে শাকসবজির আবাদ নষ্ট হয়েছে তার।
সুবলপাড় এলাকার কৃষক হারেজ আলি জানান, চরাঞ্চলের নিচু বোরো ক্ষেত ডুবে গেছে। পানি সময়মতো নেমে না গেলে এসব বোরো ধানের ক্ষতি হবে। কচাকাটা ইউনিয়নের তরিরহাট এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, এক বিঘা ক্ষেতে পাট বীজ বোনার পরদিন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে সব বীজ নষ্ট হয়ে যাবে। আবার নতুন করে পাট বুনতে হবে তার। একই অবস্থা নাগেশ্বরী পৌরসভার সুখাতি এলাকার কৃষক উদয় সেনের। বৃষ্টির পানি জমাতে তার দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো পরিমাপ করা হয়নি। তবে ফসলের খেত থেকে পানি নেমে যাওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।