১৯০৫ সালে বাঙালীর হাজার বছরের স্বপ্নকে রবীন্দ্রনাথ তার কবিতাতে নিয়ে এসেছিলেন। সেই স্বপ্নের বাংলার মাটিতে প্রতিফলন ঘটে ৬৬ আর ৬৯-এর গণআন্দোলনে। যে আন্দোলনের সূত্র ধরেই স্বাধীনতা অর্জন ১৯৭১-এ। দেশ স্বাধীন হলো বর্হিবিশে^র হাত থেকে মুক্ত হয়নি বাঙালি। দুর্নীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য শোষন ও নানামুখি শোষনের আগ্রাসনে জর্জরিত বাংলাদেশ। সেই আদিকাল থেকেই বাঙালীর মধ্যে অনেকেই কোন না কোন ভিন দেশের সর্মথক। তারা সংখ্যায় সীমত হলেও অধিক ক্ষমতাধর,। তারা তাদের সমর্থিত ভিন দেশের জন্য নিজ স্বার্থে বাংলাদেশেকে অনেকটাই বিকিয়ে দিচ্ছেন। কোনো গ্রুপ হয়তো পাকিস্তানের দালাল আবার অন্যা গ্রুপ হয়তো ভারতের দালাল। তৃতীয় গ্রুপ হয়তো আবার বিট্রেনের দালাল। যেমনটা ব্যারিষ্টারি পড়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বিট্রেনকে দিয়ে আসে বিত্তশালী বাংলাদেশ নাগরিকরা। ভিনদেশ বাংলাদেশের বুকে ছুড়ি চালিয়ে যখন ভিনদেশকে ভালবাসে তখন বাংলাদেশ পরাধীনতার শিকলে বন্দি নয় কি? পরাধীনতার ফাঁসির কাষ্টে জূলন্ত সেই দেশের চিত্রটি কবি ফুটিয়ে তুলছিলেন রবীন্দ্রনাথের “আমার সোনার বাংলা” গানের শেষ চরণে বলেছেন, “আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভ’ষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥” বিংশ শতাব্দির গোড়ায় বাংলাদেশ ছিল পরাধিনতার ফাঁসির ভ’ষনে। বাঙালি তা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ ভুখন্ডগত স্বাধীন হলেও শোষনের হাত থেকে স্বাধীন হয়নি। বিশেষ করে বৈদেশিক বাণিজ্য শোষন বাংলাদেশের অন্যতম পরাধীনতা। তাই স্বাধীন হয়েও বাণিজ্যিকভাবে স্বাধীন হলো না বাংলাদেশ। এই অবস্থায় কবির কন্ঠে কন্ঠে মিলিয়ে বাঙালীর পণ করা প্রয়োজন-পরের ঘরের পন্য কিনব না আর---। সকল পণ্য নিজের ঘরেই তৈরি করা হবে এবং বাঁচানো হবে বৈদেশিক মুদ্রা। কবি এজন্যই তার গানে এই চরণটি সংযোগ করেছেন আমাদের স্ব-দেশী আন্দোলনের সফলতা তা এই লাইনে খুজে পাওয়া যাবে। কবি স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “হেবীবহৃদয় যুবকগন তোমারা বিশ^াস কর যে, তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জম্মেছ। ওঠ, আর ঘুমিও না; সকল অভাব, সকল দুঃখ ঘুচাবার শক্তি তোমাদের ভিতরেই আছে, এ বিশ^াস যদি করো, তা হলেই ঐ শক্তি জেগে উঠবে।” তিনি আরো বলেন, “সাফল্য লাভ করিতে হইলে প্রবল অধ্যবসায়,প্রচ- ইচ্ছাশক্তি থাকা চাই। অধ্যবসায়শীল সাধক বলেন, “আমি গ-ুষে সমুদ্র পান করিব। আমার ইচ্ছামাত্র পর্বত চূর্ণ হইয়া যাইবে।” এইরূপ তেজ, এইরূপ সংকল্প আশ্রয় করিয়া খুব দৃঢ়ভাবে সাধন করা। নিশ্চয়ই লক্ষে উপনীত হইবে।”