কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, আমরা পেঁয়াজ ও পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো। সে লক্ষে কৃষকের সাথে সারা দেশব্যাপী কাজ করছে কৃষি বিভাগ। গ্রীস্মকালসহ সারাবছর চাষ করার যায় এমন জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুরে সফল কৃষি উদ্যোক্তা একাধিক কৃষি পদক প্রাপ্ত শাহীদা বেগমের পেঁয়াজ বীজ মাঠ পরিদর্শন কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, পেঁয়াজ অত্যান্ত পচনশীল মসলা জাতীয় ফসল। তবে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দেশব্যাপী কৃষক পেঁয়াজের আবাদ করে। সমস্যা দেখা দেয় সংরক্ষণ নিয়ে। আলুর মতো কোল্ডস্টরেজে এটি রাখা যায় না। এখনও পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণের লাগসই কোন প্রযুক্তি আমরা উদ্ভাবন করতে পারিনি। এজন্য পেঁয়াজ চাষীদের শতর্ক হতে হবে।
পেঁয়াজ আমদানি সম্পর্কে তিনি বলেন, রমজানে পেঁয়াজের দাম যাতে লাগামহীন না হয় সে জন্য আমদানি খুলে দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু দেখাগেলো দাম অত্যান্ত পড়ে গেছে, ফলে আমার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রনালয় উভয় সংকটে থাকে, কারণ আমরা কৃষকে বাচাতে চাইলে ক্রেতারা অখুশিহন আবার ক্রেতাকে খুশি করতে গেলে কৃষক দাম পায় না। কৃষক অনেক টাকা খরচ করে পেঁয়াজের বীজ ও পেঁয়াজ আবাদ করে। তারা যদি সঠিক দাম না পায় তাহলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। শাহীদা বেগমের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সারা দেশে এমন হাজারো শাহীদা বেগমকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা ঝুকি নিয়ে এভাবেই দেশের কৃষিতে অবদান রাখবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি উদ্যোক্তারা যাতে সহজ শর্তে ব্যাংক থেকে ঋণ পায় তার ব্যবস্থা করছে সরকার। আমরা কৃষি উদ্যোক্তাদের পাশে দাড়াতে চাই। তাদের জন্য সরকারের সহযোগিতার হাত সর্বদাই প্রসস্ত রয়েছে। কৃষির যান্ত্রিকীকরণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য ফসলের মতো পেঁয়াজের বীজও যাতে ক্ষেত থেকে মেশিন দিয়ে যাতে আহরণ করা যায় সেই প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। খুব শিঘ্রই আপনারা সেটি মাঠে পাবেন।
মাঠ পরিদর্শণ শেষে মন্ত্রী কৃষি উদ্যোক্তা শাহীদা বেগমের বাড়িতে পেঁয়াজ বীজ সংরক্ষণাগার ঘুরে দেখেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব মো: সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: বেনজির আলম, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো: আলীমুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হজরত আলী, কৃষি উদ্যোক্তা শাহীদা বেগম, বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক বক্তার হোসেন খান প্রমুখ।
এর পর মন্ত্রী ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র পরিদশণ করেন। সেখানে বারি-৪ আম গাছের চারা রোপন করেন। পরে কৃষকদের মাঝে উচ্চ ফলনশীল জাতের আদা, মরিচ, হলুদ, বারি-৫ পেঁয়াজের চারা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেন।
এ সময় মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলাউদ্দিন খান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: মুশফিকুর রহমানসহ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।