জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি হতে না হতেই বামতীর সংরক্ষণ বাঁধে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় দেড় বছরের মধ্যে সিসি ব্লক ধসে পড়ছে। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধের ধস ঠেকাতে না পরলে বিশাল এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হতে পারে।
জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২০১০ সালে যমুনার বাম তীর ভাঙন রোধে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ফুটানী বাজার থেকে শুরু করে ইসলামপুর হয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা পর্যন্ত তিনটি পয়েন্টে মোট ১৬ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সে সময় বাঁধ নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় মোট ৪ শ ৫৫ কোটি টাকা। বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে এবং শেষ হয় ২০১৭ সালে।
পরবর্তি ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দী হার্ড পয়েন্ট থেকে শুরু করে গুঠাইল হার্ড পয়েন্টের পর্যন্ত মোট ৩ কিলোমিটার দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ৩কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের ব্যয়ে ব্যয় ধরা হয় মোট ৯০ কোটি টাকা। যা ২০১৮ সালে সেনা বাহিনীর তত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০২০ সালের ৩০জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। বাঁধটি নির্মাণ করায় উপজেলার বেলগাছ,কুলকান্দী, পার্থশী ও চিনাডুলী ইউনিয়নসহ মোট ছয়টি ইউনিয়ন নদী ভাঙন রোধ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন আকবর আলী, সুজন, মিজান, সাইফুল মিজান বলেন, 'নিম্নমানের কাজ হওয়ায় দেড় বছরেই মধ্যে বাঁধ ধসে পড়ছে। এ ছাড়া তাদের অভিযোগ,এলাকার প্রভাবশালী বালু সিন্ডিকেটরা দীর্ঘদিন যাবৎ নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় বামতীর সংরক্ষণ বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। '
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি শুরু হলে কুলকান্দী হার্ড পয়েন্ট থেকে গুঠাইল হার্ড পয়েন্টের মাঝামাঝি কুলকান্দী গ্রামের মিয়াপাড়া এলাকায় হঠাৎ দুইটি স্থানে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের অন্তত ২০ মিটার সিসি ব্লক ধসে যমুনা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে কুলকান্দী শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়,কুলকান্দী বাজার, মসজিদ,মাদ্রাসা,একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ, শত শত বসতবাড়িসহ হাজারও একর ফসলি জমি। কুলকান্দী শামছুন্নাহার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভীন আক্তার, আজাদ, দিপামণি জানায়,আমাদের বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনা যমুনার গর্ভে বিলীন হতে পারে।
এবিষয়ে কুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বাবুুসহ স্থানীয় ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে বাঁধটি পুণঃ নির্মাানের দাবী জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন,'বাঁধ ধ্বসে খবর কিছু সময় আগে আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, 'বাঁধ ধ্বসের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধের ধস ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।