ছোট থেকেই অত্যান্ত মেধাবী রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর শহরের নাফিসা। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চান্স পেলেও সেখানে ভর্তি হয়নি নাফিসা। নাফিসার পিতা বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইসহাক আলী।
শুধু শহরে নয় গ্রামের বিদ্যালয় হতেও ভালো রেজাল্ট করা যায় এমন প্রত্যাশা থেকেই নাফিসার পিতার ইচ্ছেতেই গোদাগাড়ী পৌর সদরের মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করে।
এরপর রাজশাহী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হলে সেখান হতেও জিপিএ-৫ পাই। এতে করে বাবা-মাসহ পরিবারের স্বপ্ন পূরণের পথে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকে ডাক্তারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে বলে। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানেও সফলতার শীর্ষে পৌছায় এই মেধাবী নাফিফা।
এবার ২০২১-২২ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধাবী নাফিসা জিন্নাহ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে এমন তথ্য জানা গেছে। এতে করে পরিবার-পরিজনসহ এলাকায় তার সুনাম বইছে।
নাফিসার পিতা সাবেক গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসহাক আলী বলেন, ছোট থেকেই আমার মেয়েটি অত্যান্ত মেধাবী। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে রাজশাহী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছিল। কিন্তু তাকে সেখানে ভর্তি করিনি।
মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও রাজশাহী কলেজ হতে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করার পর এবার ডাক্তারি পরীক্ষায় ঢাকার শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। এতে করে আমাদের পরিবারের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে মানুষের সেবা করতে পারে এজন্য সকলের নিকট তিনি দোয়া চান।
মেধাবী নাফিসা তার প্রতিক্রিয়ায় জানায়, আমি এই ফলাফলের যোগ্য ছিলাম না, সৃষ্টিকর্তা হয়তো আমাকে এই জায়গায় যোগ্য মনে করেছেন। রেজাল্ট শোনার পর কৃতজ্ঞতা স্বরুপ তাঁর কাছে দোয়া করেছিলাম। আমার এ ভাল ফলাফলের জন্য বাবা, মা, স্কুল, কলেজ শিক্ষকসহ রয়েল কোচিং এর বড় ভাইদের অবদান বেশী।
আমার রেজাল্ট শোনার পর মা-বাবা দুজনই খুশি হয়েছেন। বেশি খুশি হয়েছেন বাবা। আমি যখন হতাশ হয়ে যাই, তিনি সান্ত¡না দেন।
মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী বলেন, নাফিসা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল, পড়া মুখস্ত করতে ভাল পারতো। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রচনা মুখস্ত করে লিখে উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কার পেত। সে বিদ্যালয়ে পর পর ২ বার বিশাল ভোটের মাধ্যমে শ্রেষ্ট ছাত্রী নির্বাচিত হয়েছিল। নিয়মিত স্কুল আসতো। বাঁশের বেড়া দেয়া এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা খাতুন উর্মি মেডিকেল পরীক্ষায় সারা দেশে পঞ্চম হয়েছিল। সে ঢাকা মেডিকেলে পড়ছে। তার উদাহরণ আমি ও শিক্ষকেরা দিতেন। তারাই ধারাবাহিকতায় নাফিসার এ ফলাফল। তার জন্য শুভকামনা রইল। সে পরীক্ষা দেয়ার আগের দিন ফোন করে আমার কাছে দোয়া নিয়েছিল। আমি তার ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা কামনা করি বলে জানান।