বাজারে নানা ধরনের ফলের সমাহার। রয়েছে বেশ কয়েকটি তরমুজের দোকানও। কাঠ ফাটা রোদ আর রোজার কারণে তরমুজ বিক্রিও চলছে হরদম। এর মাঝে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ফলের বাজারে হানা দিলে তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে দেয় দোকানীরা। এক ক্রেতা তরমুজের দাম জিজ্ঞাসা করলে ব্যবসায়ি বলেন এখন বেচুম না পরে আসেন। কেন বেচবেন না এমন প্রশ্নের জবাবে দোকানদার ক্ষেপে উঠে বলেন দেখেন না বাজারে ম্যাজিষ্ট্রেট ঘুরতাছে। কারণ খোঁজতে গিয়েই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। “এক তরমুজের দাম ৫০০ টাকা, বাজারে তরমুজের দাম আকাশ ছোঁয়া. তরমুজ কিনার সাধ আছে সাধ্য নাই, এক শ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়” দেখার কেউ নাই, এমন পোষ্টে গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সরব উঠে ভোক্তভোগীরা। বিষয়টি চোখে পড়লে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম পৌরশহরের ফলের বাজারগুলোতে হানা দেয়। এ সময় ম্যাজিষ্ট্রেট তরমুজ ক্রয়ের রশিদ পরীক্ষা-নিরীক্ষ করার পাশাপাশি কয়েকগুণ বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করার অপরাধে তিন ফল ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেন। মনির হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতা জানান, গতকাল যে তরমুজ আমি সাড়ে চার শ টাকায় কিনিছি সেই তরমুজ আজ ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে চাচ্ছে মাত্র দুই শ টাকা! ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হওয়ার কারণেই দামের এই তারতম্য। পৌরশহরের মসজিদ পাড়ার আজিজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, আজ সকালে যে তরমুজ আমার কাছে ৬০০ টাকা চেয়ে ছিল সেই তরমুজ মোবাইল কোর্ট চলার সময় ২৫০ টাকা দিয়ে কিনি। উপজেলার ধলেশ্বরের আজাদ মিয়া নামের এক যুবক বলেন, রমজানের শুরু থেকেই তরমুজের বাজারে আগুন। বাজারে ম্যাজিষ্ট্রেট আসায় সেই আগুন নিবে। এদিকে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অধিক মোনাফালোভী তরমুজ ব্যবসায়িরা তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে দেয়। আবার অনেক ব্যবসায়ি দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, সোমবার দুপুরে পৌরশহরের সড়কবাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় অধিক দামে তরমুজ বিক্রি ও ক্রয়ের রশিদ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তিন ফল ব্যবসায়িকে নয় হাজার টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি সতর্ক করে দেয়। জরিমানা প্রাপ্ত তিন ফল ব্যবসায়ি হলেন নাঈম হোসেন, হৃদয় ও ছিদ্দিক মিয়া। অভিযানে চলাকালে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলামসহ থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন।
আখাউড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষসহ সকল পন্যোর দাম যেন অসাধু ব্যবসায়িরা বাড়তে না পারে সেজন্য মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান নিয়মিত চলবে।