ককসীটের বিমান তৈরিকারী দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর সেই সবুজ সরদারের (১৮) লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যের ছোটমেয়ে ফরজানা রহমান শিমলা। গত মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সবুজের সাথে কথা বলে এই ঘোষণা দিয়েছেন।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের পলি শিবনগর মহেশপুর গ্রামের রিকশা-ভ্যান চালক একরামুল সরদারের ছেলে সবুজ সরদার। এ বছরই সবুজ এসএসসি পরীক্ষা পাশ করে দিনাজপুর উত্তরণ পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে তড়িৎ বিষয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যায়ণ করছে। আকাশে বিভিন্ন বিমান ও ড্রোন উড়া দেখে কৌতুহলের শেষ ছিল না তার। অদম্য ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৪৫ দিনে আকাশে উড়িয়েছেন নিজের তৈরি ককসীটের তৈরি বিমান।
৩০ মিনিট ধরে রিমোর্ট কন্ট্রোলের নিয়ন্ত্রণে বিমানটি আকাশে উড়ে থাকে। তার এই আবিষ্কার এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবুজ। মাত্র ৪৫ দিনে তার আবিষ্কৃত ককসীটের বিমানটি সফলভাবে আকাশে উড়ছে। সবুজ ছোটবেলা থেকে আকাশে বিমান উড়া দেখে বিমান তৈরির কথা ভাবতেন। যেই ভাবনা সেই কাজ। প্রতিদিনই ভিড় জমছে তার বাড়ীতে উৎসুক জনতার।
এদিকে সবুজ সরদারের আবিষ্কৃত ককসীটের রিমোর্ট কন্ট্রোলের বিমান উড়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে সচিত্র সংবাদ ও বিমান উড্ডয়নের ভিডিও চিত্রটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সর্বমহলে।
একইভাবে সবুজ সরদারের বিমান আবিস্কারের বিষয়টি নজর এড়ায়নি দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) নির্বাচনী এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার মহোদয়ের ছোটমেয়ে ফারজানা রহমান শিমলার। ফারজানা রহমান শিমলা মেধাবী ওই সবুজ সরদারের খোঁজখবর দেন এবং তার লেখাপড়ার যাবতীয় দায়-দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সবুজ সরদার বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারিনি যে, আমার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে আমার পাশে কেউ দাঁড়াবে। অভাবের কারণে কখন লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে, এই দুশ্চিন্তা সবসময় তাড়িয়ে বেড়াতো। কিন্তু আমাদের নেতা ফিজার আঙ্কেলের মেয়ে ফারজানা রহমান শিমলা আপু আমার সেই দুশ্চিন্তা দূর করে দিয়েছেন। আমিসহ আমার পরিবার শিমলা আপুর এই ঋণ শোধ করতে পারবো না। একই সাথে ঋণী হয়ে রয়েছি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে যারা আমার মেধাশক্তির বিষয়টি দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। তবে সহযোগিতা পেলে আরো অনেককিছু উদ্ভাবন করা সম্ভব। শুধু সুযোগ আর সহযোগিতা প্রয়োজন।
সাংসাদ কন্যা ফারজানা রহমান শিমলা বলেন, ‘গণমাধ্যমে সুবজ সরদারের বিমান উদ্ভাবন দেখে মুগ্ধ হয়েছি। সে একজন মেধামী ছাত্র। তার মেধাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশবাসী উপকৃত হবে। তাকে সেই সুযোগ করে দিতে হবে। এই চিন্তাচেতনা থেকেই সবুজ সরদারের পড়াশুণার সকল দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। পড়াশুণা নিয়ে যেন সবুজকে দুশ্চিন্তায় থাকতে না হয়। দুশ্চিন্তা মুক্ত থেকে সে যেন তার মেধাকে দেশের কল্যাণে লাগাতে পারে, সেই সুযোগ করে দিতেই এই প্রয়াস।