লালমনিরহাটের হারাটি ইউনিয়নের হিরামানিক এলাকায় বৈশাখী মেলায় জুয়ার আসর থেকে দুই জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে পুলিশ হেফাজতে রবিউল(২৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া আবদুল হালিম নামে এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম এসআই হালিমের প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের চরকেরথান এলাকা থেকে রবিউলসহ দুজনকে আটক করে এবং পুলিশ হেফাজতে রবিউলের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার হিরামানিক এলাকার বৈশাখী মেলায় জুয়া খেলা চলছিলো। এমন খবরে পুলিশ মেলায় অভিযান চালালে জুয়ারীরা দিকবিদিক পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে হারাটি কাজীরচওড়া এলাকার দুলাল খাঁনের ছেলে
রবিউল খান (২৫) এবং দক্ষিণ হিরা মানিক এলাকার মৃত রসনির ছেলে প্লোল্লাদ মেকারকে জুয়ায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে আটক করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশ আটক দুজনকে ভ্যানে উঠানোর চেষ্টা করলে রবিউল ভ্যানে উঠতে রাজি হয়নি।পরে তাকে ঘটনাস্থলে নির্যাতন করা হয় এবং সেখানে সে অসুস্থ হয়ে পরে। অসুস্থ রবিউলকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের চাচা মনসুর আলী জানান,রবিউল জুয়ার সাথে জড়িত নয়। বৈশাখী মেলা দেখতে গিয়েছিলো সে। মেলার পাশে জুয়া চলছিল। পুলিশ জুয়ারি ধরতে ধাওয়া করে এবং জুয়ারীরা পালিয়ে যায় আর মেলায় ঘুরতে যাওয়া রবিউলসহ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে রবিউল পুলিশের ভ্যানে উঠতে না চাওয়ায় বেদম মারপিট ও লাথি মারে এতে মাটিতে পরে যায় রবিউল।এসময় পুলিশের নির্যাতন রবিউলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে পুলিশ হেফাজতে বরিউলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে রাতেই উপজেলার মহেন্দ্রনগরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা। সড়ক অবরোধকারীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে নির্যাতনকারী পুলিশকে দ্রুত আইনের আশ্রয়ে আনার দাবি জানান। এ সময় তারা পুলিশের একটি গাড়িও ভাংচুর করেন।
পরদিন (শুক্রবার) দুপুরবেলা পর্যন্ত অবরোধ থাকায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে শতশত যানবাহন আটকে পরে যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে ঘটনাস্থলে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(হেডকোয়ার্টার্স) আতিকুর রহমান গিয়ে নিহত রবিউল খানের স্বজনদের সাথে কথা বলে দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস প্রদান করে বলেন, যদি পুলিশের নির্যাতনে রবিউল নিহত হয়ে থাকে তাহলে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে এমন আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে অবরোধকারীরা। বর্তমানে মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।