রাজশাহী নগরীতে টিবিপুকুর গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওইদিন সকাল ১০টায় টিবিপুকুর গণকবরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিকেল ৪টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট রাজশাহী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সভাপতি সাইদুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদণ্ডদৌলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রশান্ত কুমার সাহা। এতে অন্যান্যের মাঝে জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল, সালাউদ্দিন মিন্টু, রাজশাহী বারের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট শিরাজী শওকত সালেহিন এলেনসহ বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সিনিয়র সদস্য শরিফ উদ্দিন, সদস্য মাজেদুর রহমান, রাতুল সরকার প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যরা রাজশাহী নগরীর টিবিপুকুর হাসপাতালে ঢুকে পড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পাক বাহিনী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিকামী জনগণের ওপর এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। ওইদিন টিবি হাসপাতালে গিয়ে কর্মচারীদের লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পাক বাহিনীর সদস্যরা। গুলিতে হাসপাতালটির কর্মচারী আবদুল বারি হাওলাদার, আবদুল কাইউম ও মো. সেলিম নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের পর দুইদিন ধরে মরদেহ হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকে। দুদিন পর শহীদ আবদুল বারি হাওলাদারের সদস্যরা শিতলাই এলাকায় অবস্থানের পর নগরীতে এসে তিনটি মরদেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে।
তারা বলেন, এরপর স্বজনরা হাসপাতালের দরজার একটি পর্দার কাপড়ে তিনটি মরদেহ জড়িয়ে টিবি পুকুরের পাশে গণকবর দেন। এছাড়াও ১৪ এপ্রিলের গুলিবর্ষণে বহু হতাহত হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেই শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও তাদের সম্মান প্রদর্শন করা সকলের দায়িত্ব।