সড়কের দৈর্ঘ্য মাত্র সাড়ে ৬ কিলোমিটার। এই সাড়ে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে বাঁক রয়েছে ৫২ টি। ৫২টি বাঁকের মধ্যে অতিবাঁক ররেছে কমপক্ষে ৩০টি। এই সকল অতি বাঁকের কারণে প্রায় দিন ঘটেছে দুর্ঘটনা। এই সকল অতি বাঁকের কারণে সড়কটি যেন মৃত্যু ফাঁদে পরিনত হয়েছে। মূলত বাঁকের কারণে ওই সড়কের যাত্রীরা বিকল্প সড়ক ব্যবহারে প্রবনতা বেড়েছে। রাস্তাটি হলো
চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহসড়কের চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের দেবপুর-রাজারগাঁও-চেঙ্গাতলী-নারায়নপুর-মতলব-গৌরিপুর সড়ক।
এলজিইডি নির্মিত সড়কের ওই অংশের সবগুলো বাঁক সোজা করা সম্ভব না হলেও অন্তত অতি ঝুঁকিপূর্ন বাঁকগুলো সোজা করে দিলে দুর্ঘটনা এড়ানোসহ সড়কে যান ও যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তবে সম্প্রতি সময় সড়কটির প্রস্তস্থ করা ও নতুন কিছু সেতু তৈরি করার প্রস্তবনা অনুমোদন পেলেও বাঁক সরলিকরনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জমি অধিগ্রহনের জটিলতা ও সরলিকরনের জন্য নতুন করে প্রস্তবনার কথা বলছে হাজীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো: রেজওয়ানুর রহমান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এ সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে হাজীগঞ্জ অংশের দেবপুর হতে রাজারগাঁও সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার। এই সাড়ে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে বাঁক রয়েছে ৫২ টি। ৫২ টি বাঁকের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ন বা অতি বাঁক রয়েছে কমপক্ষ ৩০ টি।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, সড়কটি বতর্মানে পাশে ১২ ফুট চওড়া পাকা আর শোল্ডার (কাঁধ ) মিলিয়ে ১৮ ফুটের পাশ রয়েছে। জমি অধিগ্রহন করে সড়কটি যাতে পাশে পাকা ১৮ ফুট আর শোল্ডার ( কাঁধসহ ) ২৪ ফুট চওড়া করে ৭ টি নতুন বক্স ব্রীজ তৈরি করার জন্য চলিত বছরের জানুয়ারী মাসে প্রস্তবনা পাঠানোর পরে তা অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু বাঁক সরলিকরনের জন্য কোন সিন্ধান্ত নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় শত বছর পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে স্থানীয়দের চলাচলের জন্য এলাকাভিত্তিক মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়। সেই মাটির রাস্তাটি ধীরে ধীরে প্রস্তস্থ করনসহ তিন উপজেলার (হাজীগঞ্জ-মতলব-গৌরিপুর) সংযোগ সড়কে রুপ নেয়। একসময় মানুষের চলাচল বেড়ে গেলে বেবিট্যাক্সি চলাচল শুরু করে সড়কটিতে। স্বাধীনতার পর হতে সম্প্রতি সময় পর্যন্ত যাত্রী চলাচলেরর সুবিধার কথা মাথায় রেখে সরকারিভাবে এটি আরো প্রস্তস্থকরনসহ পাকা করনের কাজ চলতে থাকে যা বর্তমান সময় একটি পরিপূর্ণ সড়ক হিসেবে রুপ পায়। সড়কের সৃষ্টির শুরুর দিকে যে বাঁকগুলো ছিলো সেই বাঁকগুলো যথাস্থানে রেখে যুগযুগ ধরে সড়কটি সংস্কার প্রস্তস্থ আর পাকা করন হতে থাকে। একসময় সড়ক এলজিইডি মালিকানা লাভ করে। বর্তমানে সড়কটির দু"পাশে বনায়ন রয়েছে। বর্তমানে ওই সড়ক ধরে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার লোকজন চলাচলসহ প্রায় শহশ্রাধিক যাত্রীবাহী সিএনজি চালিত স্কুটার চলাচল করে থাকে। স্কুল কলেজের শতশত শিক্ষার্থীর চলাচল ছাড়া ও সংশ্লিষ্ট এলাকার হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল আনা নেওয়া হয় সড়ক ধরে।
উক্ত সড়কে প্রায় এক যুগ ধরে সিএনজি স্কুটার চালাচ্ছেন এমন একজন দেবপুর এলাকার ইমাম হোসেন জানান,সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রায় দিন ঘটে দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনার কারণে কত মানুষ পঙ্গু হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। আমরা চাই সড়কটি বেশি বাঁকগুলো সোজা করা হউক।
আরেক চালক স্থানীয় চতন্তর গ্রামের শামীম আহমেদ জানান, গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবো এমন ভাবনা করিনা। রিজিকের কারণে এই সড়কে গাড়ি চালাই। কিছুকিছু দুর্ঘটনা দেখলে মনে চায় এই সড়ক থেকে চলে যাই।
সড়কের পাশের গ্রাম রাজারগাঁও এলাকার কাজী বাড়ির নূর নবী (৫২) জানান, রাস্তায় বেশি বাঁকের কারণে প্রায় দিন ঘটে দুর্ঘটনা। এই সকল দুর্ঘটনার শিকার নারী শিশুদেরকে দেখলে খারাপ লাগে। বাঁকগুলো সোজা না করলে প্রতিদিনের দুর্ঘটনা এগানো সম্ভব না।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ রেজওয়ানুর রহমান চাঁদপুর কন্ঠকে জানান, সড়কটি প্রস্থস্ত করন ও ৭টি নতুন ব্রীজ জন্য আমরা চলিত বছরের শুরুর দিকে প্রস্তবনা পাঠাই। সম্প্রতি সময় তা প্রস্তস্থ করন ও সেতুগুলো নতুনভাবে করার জন্য পাশ হয়েছে। এখন টেন্ডারে যাবে তবে বাঁকগুলো সোজা করনে বড় ঝামেলা ভূমি অধিগ্রহন। সড়কের পাশের ভূমির যে দাম অধিগ্রহন ছাড়া কাজ করা মোটেই সম্ভব না। এ বিষয়ে আমরা অতি বাঁকগুলোর সরলি করনের জন্য নতুন করে প্রস্তবনা পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।