সুইয়ের ফোঁড়ে রঙ,বে-রঙ্গের সুতার নকশা কাপড়ে ফুটিয়ে তোলার ঐতিহ্য আমাদের হাজার বছরের। রক্ষণশীল সামজের নানা কুসংস্কার, নিয়মকানুন ও প্রতিবন্ধকতা কে জয় করে সূচের ফোঁড়ে নিপুণ হাতে তৈরি শাড়ী ও নকশিকাঁথায় ভাগ্য ফিরিয়েছেন চাঁদ সুলতানা চৌধুরী শাবানা। তার হাত ধরে গ্রামের নিভৃত পল্লীর অবহেলিত নারীদের নিপুণ হাতে তৈরি নকশি কাঁথা দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। সুঁই আর সুতার ছন্দময় গতিতে নানা রঙের সুতার বুননে ফুটিয়ে তুলছেন আবহমান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি ও অপরূপ সৌন্দর্যের নকশিকাঁথা। এতে বহু দুঃস্থ, অসহায় ও অভাবী মহিলাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। নারী উদ্যোক্তা চাঁদ সুলতানা চৌধুরী শাবানার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের হরিনখোলা গ্রামে। শাবানা চৌধুরী জানান উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের নূর বক্স মহালদারের মেঝো ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার কোলজুড়ে আসে দুটি পুত্র সন্তান, বড় ছেলের বয়স যখন সাড়ে বছর আর ছোট ছেলের বয়স চৌত্রিশ দিন তখন থেকেই তার সংসারে বিচ্ছেদের বাতাস বইতে থাকে। ২সন্তানের বোঝা পরে শাবানার উপর। এরপর সন্তানদের নিয়ে চলে আসেন বাবার বাড়িতে। দিনে দিনে স্বামীর সাথে দূরত্ব বাড়লে আকাশ ভেঙে পড়ে শাবানার মাথায়। কি খাবে, ছেলেদেও কি খাওয়াবে সেই দুশ্চিন্তায় কাহিল হয়ে পড়েন শাবানা। একপর্যায়ে তিনি মায়ের প্রচেষ্টায় সুচী শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে এখন স্বাবলম্বী। বড় ছেলে এশিয়া ইনভার্সিটি আশুলিয়া শাখা ও ছোট ছেলে গোবিন্দপুর সরকারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এস,এস,সি পরীক্ষার্থী। তার হাত ধরে ঠাকুরগাঁ, মুন্সিগঞ্জ সহ দেশের নানা প্রান্তে শতাধিক দুঃস্থ, অভাবী ও অসহায় মহিলা সুচী শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।তিনি জানান আমি আজ এতোদূর আসার পিছনে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আমার মা। সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেলে এই শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়ার কথা ও জানান তিনি।