হঠাৎ করে গত কয়েকদিনে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে ফরিদপুরে। গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১০৮ রোগী। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের বারান্দা ও গাছ তলায় থাকতে হচ্চে।
সরেজমিনে শুক্রবার দুপুর ১২টার সময় ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়াও আশে পাশের সকল ওয়ার্ডে এখন এই রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগী। প্রতিষ্ঠানটির কোথাও সিট না পেয়ে অনেকেই বারান্দায় ও গাছতলায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
ফরিদপুর জেলা সির্ভিল সার্জণ ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি না নেওয়ায় চাপ বেড়েছে সদর জেনারেল হাসপাতালে। এই হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা মাত্র ১০টি। বর্তমানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩৫। এই বিপুল সংখ্যাক রোগী সেবা দিতে নাস ও চিকিৎসকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় রোগীর ওষুধ সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আগারাওলা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শুক্রবার দুপুর পযন্ত এই হাসপাতালে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে ১০৮ জন। আর গত এক সপ্তাহে এ রোগের ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৪৩২ জনের। তবে ভর্তি রোগী বেশি দিন থাকছে না, ভাল হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।
রোগীর স্বজনেরা জানালেন, একদিকে চিকিৎসা সেবা পেতে কষ্ট হচ্ছে, অন্যদিনে দালালদের উৎপাত বেড়েছে অনেক। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বের হলেই পেছনে লাগে তারা।’
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার আব্দুল্লাহ আবু খান।
তিনি জানালেন, বৃহস্পতিবার রাত ২ টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ছিলাম, সেখান থেকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এখন দুপুর সাড়ে ১২টা বাজে কাঁঠাল গাছ তলায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
তিনি জানান, তার মতো আরো অনেকেই এই ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের অভিযোগ সরকারি হাসপাতাল থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
এই হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কত্যবরত সিনিয়র নার্স গোলাপি বেগম বলেন ‘ আমরা এখন সাপ্তাহিক ছুটি না নিয়েও দিন রাত রোগীর সেবা করে যাচ্ছি। রোগী আসছে প্রচুর, জায়গা দিতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ফ্লোর, বারান্দা আবার অনেকেই গাছতলায় সেবা নিচ্ছেন।’
ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিলুর ইসলাম বলেন, ‘রোগী আসছে অনেক, তবে সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি, এ রোগীদের দুই থেকে তিন দিন ঠিকমতো যতেœ রাখতে ভাল হয়ে যায়।