দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লখনিতে চীনা ঠিকাদারের অধিনে কর্মরত দেশি খনি শ্রমিকরা দুই দফা দাবিতে রোববার খনি এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন।
দুই দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, বেকার হওয়া শ্রকিকদেরকে স্ব-স্ব কাজে যোগদান করানো এবং করোনাকালীন সময়ের বকেয়া বেতন-ভাতার প্রদান করা।
সকাল ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে খনির প্রধান ফটকের সামনে থেকে খনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধিনে কর্মরত বর্তমানে বেকার হয়ে থাকা দেশি শ্রমিক ও কর্মচারিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে একই স্থানে দুই দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী, আবু তাহের প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খনির সূচনালগ্ন থেকেই আন্দোলনকারি শ্রমিকরা ভূগর্ভের নিচে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কয়লা উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে পার্শ্ববর্তী কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সচল রেখেছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ বাড়ীতে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে লকডাউন উঠে গেলেও বাড়ীতে অবস্থানকারি শ্রমিকদের তাদের কর্মে ফেরানো এবং বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ফলে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে (২৬ এপ্রিল মঙ্গলবারের) শ্রমিকদের বকেয়া বেতনভাতা প্রদানসহ স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদানের ব্যবস্থা করা না হলে দাবি পূরণের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে খনি গেটে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন।
সমাবেশ শেষে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে খনি গেটে অবস্থানরত নিরাপত্তা সুপারভাইজারের মাধ্যমে দুই দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে দেওয়া হয়।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খন বলেন, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে অধিনে কর্মরত প্রায় ১ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এরমধ্যে করোনার কারণে ৪৫০ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। ওই সময় যেসব শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছিল তারাও এখন বেতনভাতা দাবি করছেন। কিন্তু চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসহ কাজে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো বা তাদেরকে আবারও কাজে নিতে পারে। তবে খনি কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে ওইসব শ্রমিকদের বিসিএমসিএল এর পক্ষ থেকে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন ঈদে পুরনায় তাদেরকে অর্থ সহায়তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত এখনও পাওয়া যায়নি।