আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটিতে ইজারা গ্রহিতার অনুকূলে দখল হস্তান্তরের ঘোষণার পর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে জলমহালের মাছ ধরা ও নিজেদের বাসায় আগুন লাগিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাদাাকাটি বিল ফিসারী (বদ্ধ) জলমহালে এ ঘটনা ঘটেছে।
কাদাকাটি মৌজায় ১৫০.৯০ একর আয়তন বিশিষ্ট কাদাকাটি বিল ফিসারী জলমহাল ১৪২৯-১৪৩২ সন পর্যন্ত ৪ বছর বার্ষিক ১১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকায় এবং পরবর্তী শেষ ২ বছর ২৫% বর্ধিত হারে ইজারা মূল্য নির্ধারন করে ৬ বছরের জন্য কাদাকাটি পূর্বপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ কে ইজারা প্রদান করা হয়। গ্রহিতা সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম ১৪২৯ সনের ইজারা মূল্যসহ অন্যান্য করাদি পরিশোধ করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে দরগাহপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার তাদেরকে জরমহালের দখল বুঝিয়ে দেন ২৫ এপ্রিল। সাথে সাথে ঢোল শহরত, মাইকিং এর মাধ্যমে ও লাল পতাকা উত্তোলন করে দখল হস্তান্তরের ঘোষণা প্রচার করা হয়। সেখানে অবৈধ দখলে থাকা কাদাকাটি গ্রামের মইনুর বেগের ছেলে মিকাইল বেগ দিং দখল হস্তান্তরের পর কিছু অংশ অবৈধ দখলে রেখে দেয়। এদিন দিবাগত রাতে জলমহল থেকে মাছ ধরে মাছ ব্যবসায়ী সাধন দাশের কাছে বিক্রয় করে তারা। এমনকি রাতের কোন একসময় নিজেদের বাসায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইজারা গ্রহিতা সভাপতি হাফিজুল জানান, ইজারা পাওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষ নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে জানতে পেরে ২১ এপ্রিল থানায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করি। ভূমি সহকারী কর্মকর্তা দখল হস্তান্তরের ঘোষণা দেয়ার পর এদিন রাতে তারা মাছ ধরেছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে নিজেরা নিজেদের ঘেরের বাসায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল হক বলেন, দখল হস্তান্তরের ঢোল শহরত ও মাইকিং করা হলে প্রতিপক্ষ নিজেদের বাসায় আগুন দিয়েছে। এ ছাড়া রাতে ঘেরের মাছ অবৈধভাবে ধরে সাধন নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপ্লব রায় বলেন, ইজারা না পেয়ে কারসাজি করে নিজের বাসায় আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে জব্দ করতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে আমার ধারনা। এ ছাড়া তারা ঘেরের মাছ ধরেছে, যা অনেকে দেখেছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মৎস্য ব্যবসায়ী সাধন দাশ বলেন, মঙ্গলবার রাতে মিকাইল ঐ নদী (জলমহাল) থেকে ৪ কেজি ৯০০ গ্রাম বাগদা ধরে আমার কাছে বিক্রয় করেছিল। আমি রাত ১০.৩০ টার দিকে মাছ নিয়ে বাড়ি আসি।
ইজারা গ্রহিতারা জানান, তারা জলমহাল দখল হস্তান্তরের পর জলমহালে দখল নিয়েছি। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা জমি ছেড়ে দিত চায়না, এমনকি আমাদের হাতপা কেটে নেবে ও জীবন নাশের হুমকী ও মিথ্যা মামলায় ফসাবে বলে আস্ফালন করে যাচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে নিজেদের বাসায় আগুনি দিয়ে আমাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেন।