বাজার ব্যবস্থাপনা ও পরিবহন জটিলতায় ক্রেতা সংকটে দাকোপে তরমুজের বাজার নিম্ন মূখী। পূঁজি বাচাতে চাষিরা মাল নিয়ে ছুটছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘাটে পথে চাঁদাবাজি আর অতিরিক্তি টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের তুলনায় এবার দাকোপে দ্বিগুন জমিতে (সাড়ে সাত হাজার হেক্টর) তরমুজের চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু অনাবৃষ্টি আর চাষিদের অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ফলন খুব বেশী ভাল হয়নি। অপরদিকে তুলনামূলক এবার দাকোপে বহিরাগত পাইকারী ক্রেতারা খুব বেশী আসেনি। হাতে গোনা কিছু ক্রেতা আসলেও দালালদের দৌরাত্ন আর পরিবহন ব্যবস্থায় নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা মাঠ থেকে তরমুজ কেনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ফলে প্রভাবটা সরাসরি প্রান্তিক চাষিদের উপর পড়ছে। যে কারণে ক্রেতা সংকটে দাকোপে তরমুজের বাজার নিম্নমূখী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে সৃষ্টি হওয়া ফড়িয়া এবং চাষিরা তরমুজ বিক্রি করতে ছুটছেন ঢাকা চট্রগ্রাম গাজীপুর জয়পুরহাট গোপালগঞ্জ ফেনী কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে। তবে সে ক্ষেত্রেও আছে নানা প্রতিবন্ধকতা। ভারী ট্রাক প্রবেশে বিধি নিষেধ থাকায় দাকোপ থেকে সরাসরি মাল নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। অভ্যান্তরীন বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট ট্রাক পিকাপ বা অন্য কোন বাহনে করে এনে বটিয়াঘাটা থেকে ভারী ট্রাকে তরমুজ লোড দিতে হচ্ছে। ফলে প্রতিটিপে অতিরিক্ত ১০/১২ হাজার টাকা পরিবহন ও লেবার খরচ গুনতে হচ্ছে। পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, ভারী ট্রাক গুলো যদি (পৌরসভার প্রবেশপথ) মান্নানের মোড় পর্যন্ত ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে চাষিরা বেশ লাভবান হবে। উপজেলা প্রশাসন দাবী করেছেন রাস্তার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং সড়কের শৃংক্ষলা রক্ষা ও চলাচল নির্বিঘœ করতে দাকোপ উপজেলা প্রশাসনের যৌথ সভায় ভারী ট্রাক প্রবেশ না করানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। অপরদিকে বিভিন্ন ঘাট এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে চাঁদাবাজির কথা শোনা যাচ্ছে। উপজেলার পানখালী ও পোদ্দারগঞ্জ ঘাট ও ফেরীতে সরকার নির্ধারীত মূল্যের বাইরে কয়েক গুন বেশী টোল আদায় করা হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে চালনা পৌরসভাধীন আচাভূয়া এলাকার তরমুজ চাষি খানজাহান মোল্যা দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন সম্প্রতি তরমুজ পরিবহন মালিক শ্রমিক এবং ইজাদার পক্ষের মাঝে অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে প্রকাশ্যে ঝগড়া হয়েছে। তিনি এ ঘটনার প্রতিকার দাবী করে বলেন অন্যথায় ক্রেতা সংকটে চাষিরা আরো বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিন্টু বিশ্বাস অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।