শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নন্নী ইউনিয়নের নন্নী ইসলামীয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পএিকায় ক্রুটিযুক্ত সংশোধনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে বেগ ডেটে স্বাক্ষর নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পায়তারা, নিয়মিত ম্যানিজিং কমিটি গঠনে নানা অনিয়ম ও নানা দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ মাদারাসার অবিভাবক সদস্যসহ স্থানীয়রা ক্রুটিযুক্ত সংশোধনী নিয়োগ বাতিল করে পূনরায় পত্রিকায় স্বচ্ছ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও মাদারাসা ম্যানেজিং কমিটি সূত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের নন্নী ইসলামীয়া আলিম মাদরাসায় নিয়োগের জন্য পাচঁটি পদে বিপরীতে দুটি পত্রিকায় গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৩ তারিখে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. মোখলেছুর রহমান তালুকদার, ৫টি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পদগুলো হলো অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেট, নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী, ও আয়া। এদের মধ্যে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী এর ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ১ম বার বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া হয়, এইচএস সি ব্যবসায় শিক্ষা/ সমমান। যা বেসরকারী মাদ্রাসা শিক্ষক ও র্কমচারী নিয়োগ, যোগ্যতা এবং জনবল কাঠামোর সর্বশেষ ২০২১ সালের ১২ মে মাসের সর্বশেষ পরিপত্র সংশোধনের সাথে বিপরীতধর্মী ও সাংঘর্ষিক। যেখানে পরিপত্রে উল্লেখ আছে, আলিম/এইচএসসি বা সমমমান। সেখানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তার মনগড়াভাবে যোগ্যতার কথা উল্লেখ করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশরে চার দিনের মাথায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ধ বা লিখিত রেজুলেশন ছাড়াই পূনরায় আবারো একটি সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারী পত্রিকায় প্রকাশ করেন। সেখানেও কি সংশোধন করা হলো তার কোন উল্লেখ নেই। তাছাড়া সেখানে পূর্বে যারা আবেদন করেছেন, তাদের পূনরায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই এমন কোন কথাও উল্লেখ নেই। তাছাড়া সংশোধনী বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির অনেকেই কোন কিছু জানেন না বলে জানা গেছে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তার পছন্দের বেশিরভাগ লোকজন দিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে আগ্রহী প্রার্থী থাকা সত্বেও সংরক্ষিত নারী সদস্য ও বিদ্যুসাহী সদস্য, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আলিম শাখার অবিভাবক সদস্য, এবতেদায়ী শাখার শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়াই ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
বর্তমানে পাঁচটি পদে নিয়োগের জন্য মোট ৪৯ জন আবেদন করেছেন, এর মধ্যে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ১৯ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১১ জন, পরিছন্ন কর্মী ৬ জন, নিরাপত্তার্কমী ৬ জন এবং আয়া পদে ৭ জন আবেদন করেছেন। আবেদন কারীদের তালিকা থেকে জানা গেছে অএ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এর ছেলে মো. মাসুদ রানা অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদন করেছেন। এর জন্যই নিয়ম বর্হিভূত ভাবে তড়িঘড়ি করে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাদরাসা অবিভাবক সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পর থেকেই যেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষক ও র্কমচারী নিয়োগ, যোগ্যতা এবং জনবল কাঠামোর সর্বশেষ পরিপত্র সংশোধনের সাথে সাংর্ঘষিক। ক্রুটিযুক্ত মনগড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পএিকায় প্রকাশ করে নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য তাড়াহুড়া করছেন। ম্যানেজিং কমিটির বেকডেটে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর নিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। গত ৫ এপ্রিল এর পরে ২৭ ফেব্রুয়ারী তারিখ দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের অনেকের বাড়ীতে গিয়ে বেকডেটে স্বাক্ষর নিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এরকম অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না।
অধ্যক্ষ মো.মোখলেছুর রহমান তালুকদার বলেন, পএিকায় সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য প্রথমে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লিখিত রেজুলেশন রয়েছে। কমিটির সদস্যদের মৌখিক সিদ্ধান্তের আলোকে বেক ডেটে রেজুলেশন দেখিয়ে পএিকায় সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। কমিটি না চাইলে এ নিয়োগ বাস্তবায়ন করা হবে না।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা আবু মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, সচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ কে পরার্মশ দেওয়া হয়েছে। কোন ধরণের ক্রুটি থাকলে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে দিব না। প্রয়োজন হলে পদত্যাগ করে চলে যাব তারপরও প্রতিষ্ঠানে কোন ধরণের অনিয়ম সহ্য করা হবে না।