দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানীর করার অভিযোগে রোববার রাতে নীলফামারীর ডিমলা নাউতরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের (প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান) অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়নকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। রাতে নাউতরা ইউনিয়নের সোনামনির ডাঙ্গা বাজারে উক্ত ছাত্রীর অভিভাবকসহ এলাকাবাসী নয়নকে লাঞ্চিত করে। নয়নের ছোটভাই নাউতরা ইউপি চেয়ারমান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি ঘটনাটি ভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে মর্মে উক্ত ছাত্রীর অভিভাবকগন অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জানা যায়, সরকারীভাবে গত ২২ এপ্রিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ থাকলেও নাউতরা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন অযুহাতে তার প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখেন। গত ২৮শে এপ্রিল ক্লাশ পরীক্ষায় ৫ম শ্রেনীর ঐ ছাত্রীর রুমে গিয়ে অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়ন ছাত্রীটির হিজাব ঠিক করার নামে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। এতে ছাত্রীটি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে পরীক্ষা শেষে অফিসে নিয়ে এসে বিভিন্নভাবে কাউকে না বলার হুমকি ধামকি প্রদান করেন অভিযুক্ত নয়ন। ছাত্রীটির পিতা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চাকুরী করেন। গত শনিবার ছাত্রীটির পিতা বাড়ী আসলে ছাত্রীটির মা বিষয়টি খুলে বলেন। রোবাবার একাধিকবার নয়নকে দেখা করার জন্য ফোন দেয় ছাত্রীটির পিতা। এ সময় নয়ন বিভিন্ন অযুহাতে ব্যস্ত রয়েছে মর্মে জানায়। নয়ন রাতে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সোনামনির ডাঙ্গা বাজারে আসলে ছাত্রীটির পিতাসহ স্থানীয় অভিভাবকগন বিষয়টি জানতে চাইলে নয়ন সদোত্তর দিতে না পারায় স্থানীয় লোকজন তাকে লাঞ্চিত করেন।
ছাত্রীটির চাচা মামুন-অর-রশিদ জানায়, রাতে বিষয়টি নিয়ে আপোষ মিমাংশার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান তার কার্য্যালয়ে নিয়ে যায় কিন্তু রাত ৩টায় দিকে জানায় পরের দিন (আজ) স্কুলে আপোষ মিমাংশার কথা বলে বিদায় দেন। কিন্তু সকালে জানতে পারেন স্থানীয় সকল অভিভাবকদের ডেকে পাঠান ইউপি চেয়ারম্যান। অভিভাবকগণ উপস্থিত হলে ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ছাত্রীটির পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করবে মর্মে জানতে পারি।
তিনি আরও বলেন ঘটনার সময় শিক্ষার্থীটির শ্লীলতাহিন ঘটনায় স্থানীয় অভিভাবকগন জিজ্ঞাসা করলে নয়ন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সে কারনে স্থানীয় জনগন তাকে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় নয়নের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে।
নাউতরা ইউপি চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ নয়নের ছোটভাই আসিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি বলেন, রাজনৈতিক কারনে আমার ভাইকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। আমার ভাই দীর্ঘ ১৭ বছর থেকে চাকুরী করে আসছে। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিতভাবে দিতে পারত। গতকাল রাতে আপোষ মিমাংশার জন্য কথা হলেও আজকে সকালে স্কুলে অভিযুক্ত পরিবারের লোকজন আসেনি। ডিমলা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে। নাউতরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়নকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে থানায় ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগেরে প্রেক্ষিতে ডিমলা থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করেন।