পিরোজপুরে নেছাবাবাদে গ্রামীন জনপদে তরমুজ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন হাজারো অস্বচ্ছল চাষীরা। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় শত একর অনাবাদি জমিতে তরমুজ চাষে চুড়ছে নেছাবাদের কৃষকরা। কৃষি সম্পসারন বিভাগের পরামর্শে প্রতি বছর বাড়ছে তরমুজের আবাদ। গত ৫ বছরের চেয়ে এ বছর অনুকুলে আবহওয়া থাকায় এর ফলন ভাল হয়েছে এমনটি আশা ব্যক্ত করলেন চাষীরা। দক্ষিণের প্রত্যন্ত এলাকা গাজিরপু,গলাচিপা, মাটিভাঙ্গা, পাথরঘাটা ও রাংঙ্গাবালীতে উৎপাদিত তরমুজ পিরোজপুরের নেছারাবাদে মাইলকে-মাইল ঝুড়ে গড়ে উঠছে ভাসমান হাট। চলতি খরিপ মৌসুমে যে দিকে দু’চোখ যায় সে দিকে কেবলই দিগন্ত মাঠ জোড়ে সবুজ-হলদের সংমিশ্রনে চৈত্রের বাহারী মৌসুমি ফল তরমুজের সমারোহ। বিস্তৃর্ণ তরমুজ ক্ষেতে এখন চলছে কৃষান-কৃষানীদের তরমুজ তোলার হিড়িক। ফলন ভাল হওয়ায় চাষীদের চোখ-মুখে এখন হাসির ঝিঁলিক। তারা সহাস্যেই বলছেন, এবছর কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয়ায় এবং পোকামাকড়ের উপদ্রুপ কম থাকায় তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে। এ কারণে অুুলনগর, গাজিপুর, গলাচিপা,পাথরঘাটা, রাংঙ্গাবালি ও মাটিভাঙ্গা এলাকার চাষীরা এ ফলনের খুশীতে আত্মহারা-উজ্জীবীত-দিশেহারা।
এ বছর তরমুজে লাভের মুখ দেখবেন বলে এনজিও থেকে আনা চড়া সুদের ঋনের বোঝাও সহজেই মেটাতে পারবেন এমনটাই আশা করছেন চাষীরা। কিন্তু উৎপাদিত তরমুজের ইপ্সিত বাজার দরও পাচ্ছেন তারা। উৎপাদিত তরমুজ দ্রুত রপ্তানি এবং পরিবহন ব্যায় বেড়ে যাওয়ায় তারা খরচ পুষিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে পারছেন না। স্থানীয় নেছারাবাদ ভাসমান বাজারে পাইকারি দরে বিভিন্ন এলাকার তরমুজ বিক্র হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতেই রমজানে দাম ভাল পেলেও তিন দিনের মধ্যে সে দাম দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করে। রমজানে স্থানীয় বাজারে বড় আকারের একটি তরমুজের দাম ৩শ থেকে ২৮০ টাকা, মাঝারির দাম ১৬০ থেকে ১৪০ এবং ছোট একটির দাম ৯০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রয় হলে বর্তমানে তরমুজ প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কম দরে বিক্রয় হচ্ছে বলে ব্যাবসায়ীরা জানান। উত্তরের জনপদ নেছারাবাদ পল্লী অঞ্চলসহ পিরোজপুর সদর, অুুলনগর, গাজিপুর, গলাচিপা,পাথরঘাটা, রাংঙ্গাবালি ও মাটিভাঙ্গা এলাকায় চলতি খরিপ মৌসুমে ৩শ’ ৩০ একর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। তবে মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের অতুলনগর গ্রামেই চাষ হয়েছে ব্যাপক। এখানকার পরিবেশ ও বেলে দো-আঁশ মাটির কারণে তরমুজ চাষ অত্যন্ত উপযোগী, যে কারণে প্রতিবছর এসব এলাকায় জনপ্রিয় ফসলে পরিনত হচ্ছে তরমুজ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ঔসব এলাকার মাটি ও আবহাওয়ায় বিভিন্ন ফসলসহ দেশীয় ফল-ফলাদির জন্য অত্যন্ত উপযোগী। সেকারনে এখানকার মাটিতে তরমুজ,বাঙ্গীসহ মাল্টা, লিচু ও বিভিন্ন জাতের আম চাষের আবাদ প্রতি বছরই বেড়েই চলছে। এখানকার চাষীদের দাবী সরকার সহজ শর্তে কৃষি ঋনের ব্যাস্থা করে দিলে শিক্ষিত আনেক বেকার যুবকসহ কৃষকরা এসব ফল চাষে আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসবেন।