ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা ও সেবার দিক দিয়ে পরপর একাধিকবার দেশ সেরার তালিকায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখে। অথচ এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিশুকে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করার। এক ভুক্তভোগী লাইভে এসে এমন অভিযোগ করেন। ওই লাইভটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ফেসবুক লাইভে দেখা যায় ওই ভুক্তভোগি আইনের আশ্রয় নিতে নবীনগর থানায়ও গিয়েছেন। লাইভটি নবীনগরে টক অব দা টাউনে পরিনিত হয়েছে।
জানাযায়, ডায়েরিয়ার প্রকোপ নিয়ে গত ৫ মে পীর কাশিমপুর গ্রামের ১বছরের শিশু আরিয়ান নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিলো, ৭ মে রাতে তাকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করা হলে শিশুটির পিতা শাহিনুল ইসলাম তা দেখে প্রতিবাদ করেন। এ সময় নার্সের সাথে তর্কবির্তক শুরু হলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কয়েকটি ইনজেকশনের বোতল হাতে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে এ বিষয়ে অভিযোগ তুলেন শাহিনুল। লাইভে থেকেই অভিযোগ দিতে নবীনগর থানায় চলে আসেন। ওই দিনই রাতেই হাসপাতাল থেকে সন্তানের রিলিজ নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তিনি। রহস্যজনক কারণে লাইভটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সোমবার বিকেল থেকে ওই লাইভটি সামাজিক যোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে নবীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান নিয়ে উঠে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার দাবী উঠেছে।
অভিযোগকারী শাহিনুল ইসলাম জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে আমার ছেলেসহ ডায়রিয়া প্রকোপ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কয়েকজন শিশুকে। প্রায় ৮০ভাগ উষধ আমার ছেলের শরীরে যাওয়ার পর বিষয়টি আমার নজরে এল তাৎক্ষনিক নার্সকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে পরেন। পরে আমি বাধ্য হয়ে ফেসবুক লাইভে আসি। আমার নিরাপত্তার কারণে ভিডিওিটি অনলি মি করে রেখেছিলাম, কি করে ভাইরাল হয়েছে আমি বলতে পারবোনা। বর্তমানে আমার ছেলে ভালো আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরামউল্লাহ জানান, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি, তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সঠিক তথ্য বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই আমি শিশুটির খোঁজ খবর নিয়েছি এবং শিশুটির অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি। আলহামদুল্লিাহ শিশুটি ভালো আছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আমরাও নজরদারী করছি।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবীবুর রহমান মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করার বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, হাসপাতাল নিয়মনীতির মাঝে চলে, এখানে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঊষধ দেওয়া তো দূরের কথা, কোন রোগীর চিকিৎসা সেবা নিয়ে অবহেলা করা চলেনা। আরিয়ান নামে যে শিশুটি ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো, সে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে। হাসপাতালের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।