কিছুই করে থামানো যাচ্ছে না অবৈধ পুকুর খনন। রাজশাহীর বাগমারায় পরিবেশ আইন অমান্য করে অবৈধভাবে পুকুর খননের হিড়িক পড়ে গেছে। তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়, নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সরকারী পাকা রাস্তা। এমন কর্মকা-ে প্রভাবশালীরা লাভবান হলেও হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। আবার এই মাটি ট্রাক্টরযোগে পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে পাকা রাস্তা।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমিতে পুকুর খনন এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা দ-নীয় অপরাধ। দুই আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। বিষয়টি বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান স্বীকার করলেও রহন্যজনক করণে বাস্তবে সেই আইনের কোনো প্রয়োগ। রাজশাহীর অন্যান্য উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করতে প্রশাসন তৎপর থাকলেও বাগমারায় তার ব্যতিক্রম লক্ষ করা গেছে।
সরকারী সম্পত্তিতে জোর পূর্বক অবৈধ পুকুর খননের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন, উপজেলার বাসুপাড়া ও ঝিকরা ইউনিয়নের জনসাধারন। অভিযোগ পত্রে তারা অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বাগমারায় প্রভাবশালী মহল গুলো কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের আবাদি জমিতে জোরপূর্বক পুকুর খননের নামে ফসলি জমির মাটি অবাধে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। স্থানীয় প্রশাসনের মদদ থাকায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও বন্ধ হচ্ছে না কৃষিজমিতে পুকুর খনন কাজ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননকারী একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন করলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে কিভাবে পুকুর খনন হচ্ছে এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান তারা।
সরেজিমনে দেখা গেছে, উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তপাড়া, ঝিকরা ইউনিয়নের ঝিকরা, বারুইপাড়া ও মাধাইমুড়ি, বাসুপাড়া ইউনিয়নের ইসলাবাড়ি গ্রামের সরকারী জায়গা অবৈধভাবে দখল এলাকার প্রভাবশালীরা পুকুর খনন করছেন। বর্তমানে পুকুর খননের নামে প্রকাশ্যে ভেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে ট্রাক্টরযোগে বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করতে দেখা গেছে। এসব ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলের কারণে উপজেলা সদ্য নির্মিত রাস্তাগুলো ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে। এ ছাড়া ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ে ধুলোবালির স্তুপ জমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক সুফিয়ান বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন জায়গায় পুকুর খননের প্রমান পায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।