শহরের রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে ১২ মে বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলনে ৪শ’ জন কাউন্সিলর ও ৬শ’ জন ডেলিগেটর থাকছেন। আর সম্মেলনস্থলে নিযুক্ত থাকছেন ৩শ’ স্বেচ্ছাসেবী। এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা হতে বাইরে থেকে শহরে সবধরনের যান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
জানা গেছে, সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি রয়েছেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপুমনি এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, শিল্প ও বা্িযণজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এমপি। প্রধান বক্তা রয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনস্থলে ১৫ হাজার নেতাকর্মীর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঁচশো সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি থাকছে সিসি ক্যামেরা। ঢাকা থেকে কলরেডি মাইক ভাড়া করে আনা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনস্থল ও আশপাশে উপস্থিত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বুধবার বিকেলে সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, জেলা নেতৃবৃন্দ সম্মেলনস্থল প্রস্তুতের কাজ তদারকি করছেন। পুরো মাঠ জুড়ে বাঁশ ও শামিয়ানা দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। মাঠের পূর্ব পাশে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মূল মঞ্চ। মঞ্চের পাশে সাংবাদিকদের বসার স্থান করা হয়েছে। পেছনে ছাউনির আদলে স্থাপন করা হয়েছে বড় এলইডি টিভি। তবে দুদিনের বৃষ্টিতে মাঠের ঘাসে পানি জমে গেছে। সেখানে বালি দিয়ে পানি কাদা অপসারণের কাজ চলছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, সম্মেলন বাস্তবায়নে গঠিত প্রস্তুত কমিটি ও বিভিন্ন উপকমিটি নিরলসভাবে কাজ করছে। বৈরি আবহাওয়াকে মাথায় রেখেই সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশা করছি সম্মেলনকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে পারবো সকলে মিলে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। স্মরণকালের সেরা সম্মেলন উপহার দিতে পারবো বলে আশা করছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ফরিদপুরের সদর আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২০২০ সালের জুনে পরিচালিত শুদ্ধি অভিযানের পর দেশব্যাপী বহুল আলোচিত ২ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলায় খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অনুসারী প্রায় দুই ডজন শীর্ষ নেতা সিআইডি ও পুলিশের গ্রেফতার হন। এবারের সম্মেলনে খন্দকার মোশাররফ সহ তার অনুসারীরা থাকছেন না। মোশাররফের বলয়মুক্ত জেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ফরিদপুরবাসীর মাঝেও ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ফরিদপুরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তুহিন লস্কর জানান, আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে ব্যাপক জনসমাগমের উপস্থিতিকে মাথায় রেখে শহরে যান চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত শহরের প্রবেশমুখ ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে বাস, ট্রাক, মোটর সাইকেল ও রিকশাসহ অন্যান্য যান প্রবেশ বন্ধ থাকবে। নেতাকর্মীরা পায়ে হেটে সম্মেলনে যোগ দিবেন। শহরের মধ্যে সীমিত পরিসরে যান চলাচল করলেও স্টেশন রোড রেল ক্রসিং, টেপাখোলা সোনালী ব্যাংকের মোড়. লালের মোড় পাসপোর্ট অফিসের সামনের সড়কে কোন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এ ছাড়া কমলাপুর পিডব্লিউডি অফিসের সামনে, পানির ট্যাংকের সামনে, টিএন্ডটি অফিসের সামনের সড়ক, মাতৃমঙ্গল হাসপাতালের সামনের মোড় এবং অফিসার্স ক্লাবের সামনের সড়কে কোন গাড়ি চলবে না। লোকজন পায়ে হেটে চলাচল করবে।