দখল-দূষণসহ নানা কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দেশের অন্যতম নদ বড়াল। পাবনার চাটমোহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদ এখন অস্তিত্ব সংকটে। বড়াল নদে গৃহস্থালি বর্জ্য,মুরগির বিষ্ঠা,পথিলিন ফেলায় তলদেশ ফুলেফেঁপে উঠেছে। দূষিত হচ্ছে আশপাশের এলাকার পরিবেশ। অবৈধ দখলদাররা যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ করে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্যে পরিচালনা করে আসছেন। ধানসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করছেন বড়াল নদে। দূষণের কারণে বেড়েছে মশার উৎপাত। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করা,সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারি কোনো উদ্যোগ না নেওয়া,অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা, প্রশাসনের উদাসীনতাসহ নানা কারণে একসময়ের খর¯্রােতা বড়াল নদের এমন করুণ পরিণতি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে নদের তলদেশে ইরি ও বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। পানি না থাকায় নদী কেন্দ্রিীক সকল কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। দূষণ চলছে নানাভাবে। কিন্তু কারো কোন মাথাব্যাথা নেই।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন বড়াল নদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,বড়াল নদের পাড় দখল করে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ নানা স্থাপনা। গৃহস্থালি বাড়ির বর্জ্যে দোকানপাটের উচ্ছিষ্ট পলিথিন ফেলা হচ্ছে বড়াল নদে। দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কেউ কোনো কথা বলার সাহস পান না। অনেকেই নদের তলদেশে ধান,সবজির চাষ করছেন। নদের পাড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মুরগীর খামার। খামারের বর্জ্য পাউপের মাধ্যেমে ফেলা হচ্ছে বড়ালে।
বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব ও বাপার নির্বাহী পরিষদের সদস্য এস এম মিজানুর রহমান বললেন,আমরা নদী বাঁচাতে আন্দোলন করছি। নদ-নদী মানুষের জন্য আশির্বাদ। বড়াল নদসহ এ অঞ্চলের সকল নদ-নদী খননসহ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার দাবি আমাদের। দূষণরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনকে।
তিনি বলেন,বড়ালকে বানানো হচ্ছে ময়লার ভাগাড়! চাষাবাদ করা হচ্ছে। দখল তো আছেই। আমরা সামাজিক সংগঠন হিসেবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। কিন্তু স্থানীয় এবং ঊর্ধ্বতন প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বড়ালের এমন করুণ পরিণতি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম বলেন,বড়ালের বিষয়টি নজরে এসেছে। দখলকারীদের ব্যাপারে অতিসত্তর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া খনন করাসহ নদীকে প্রবাহমান করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।