ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের উত্তর মন্ডল পাড়া গ্রামে বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করে মাংসের জন্য জবাই করেছে এলাকাবাসী। এ নিয়ে জেলায় ৬টি নীলগাই উদ্ধার হলো। যার একটিও বেঁচে নেই।
১২মে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ১নং ধর্মগর ইউনিয়নের উত্তর মন্ডলপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা জানান বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার ফসলের খেতে ছোটাছুটি করছিল অপরিচিত একটি প্রাণী। গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তাঁরা প্রাণীটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমায়। একসময় গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করে মাংস খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাঁরা প্রাণীটির গলায় ছুরিও চালাতে শুরু করেন। সে সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সেখানে গিয়ে উপস্থিতও ছিলেন।
ধর্মগড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উত্তর মন্ডল পাড়া এলাকায় বুধবার (১১ মে) সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্ত থেকে একটি বিলুপ্ত প্রজাতির নীলগাই প্রবেশ করে।এলাকাবাসী ১২ মে দুপুর সেটিকে আটক করে।
নীলগাইটি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসী সেটি জবাই করে দেয়। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন বলেও তিনি জানান।
প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উত্তর মন্ডলপাড়া গ্রামের কিছু লোক ক্ষেত থেকে ভুট্টা তোলার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় তারা হঠাৎ একটি নীলগাই দেখতে পান। সেসময় তাড়া করে নীলগাইটিকে ধরেন তারা। একপর্যায়ে নীলগাইটি অসুস্থ হয়ে গেলে স্থানীয়রা নীলগাইটিক কে জবাই করে দেন। ধারণা করা হচ্ছে এটি ভারত থেকে এসেছে।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, বিলুপ্ত হওয়া নীলগাই জবাই করা ঠিক হয়নি। তবে গ্রামের মানুষের বক্তব্য গাইটি খুব অসুস্থ ছিল। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোককে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
খবর পেয়ে বন বিভাগ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শন দল পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মতে ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, নীলগাই বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি বন্য প্রাণী। গাই হিসেবে পরিচিত হলেও নীলগাইটি কখনোই গরুশ্রেণির নয়; বরং এটি এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হরিণবিশেষ প্রাণী। শত বছর আগে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নীলগাই দেখা যেত। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের মাঠে-ঘাটে একসময় নীলগাইয়ের দেখা মিলত। এখন দেখা যায় না।