আশাশুনিতে ভূমিহীন নেত্রীকে খাস জমি থেকে উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ঘড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আশাশুনির ভূমিহীন মানুষের প্রাণের মানুষ ভূমিহীন নেত্রী মারুফা খাতুন গরীব ও অসহয়ত্বের করাল গ্রাসে দীর্ঘ জীবন সংগ্রামে একজন বিজয়ী নেত্রী। যিনি অসহায় মানুষের জন্য সংগ্রাম ও নিবেদিত প্রাণ। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে নিজের জন্য কিছু ভাববার সুযোগ বা সময় তার ছিলনা। তাই নিজে যেমন কর্মব্যস্ত ছিলেন, তার স্বামী আমিরুল ইসলামও পরিচ্ছন্ন ও কর্মময় জীবনের মধ্যে জীবন পরিচালনা করেছেন। তাই তার সাধনার ফসল ১৯৯২ সালে দেবহাটা হাসপাতালে মালির চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ। আর তিনি থেমে থাকেননি। তার কর্মের প্রতি কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টি যোগ্যতার মাধ্যমে প্রমাণ করতে পেরেছিলেন বলেই ১৯৯৪ সালে আশাশুনি হাসপাতালে নিরাপত্তা প্রহরী পদে সুযোগ পেতে সক্ষম হন। ২০১৬ সালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সিভিল সার্জন অফিসে অফিস সহায়ক পদে যোগদেন। ২০১৮ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জমাদ্দার পদে চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
অন্যদিকে বেতনের টাকার পাশাপাশি জিডি ফান্ড, গৃহনির্মান. মটর সাইকেল ক্রয় ঋণ গ্রহণ এবং সোনালী ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও হতে ঋণ নিয়ে ওয়াপদার বাধের ভিতরে রেকর্ডীয় (স্বপ্নের ভিটেবাড়ির জন্য) একখন্ড জমি ক্রয় করেন এবং জমির পাশে পাউবো’র খাস জমি ডিসিআর নিয়ে মোট ২৯ শতক জমিতে বসবাস শুরু করেন। ২০১৪ সাল থেকে নদীর চরে স্বামী স্ত্রী মিলে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘ সময়ে জমিতে বাঁশের খুঁটির উপর গোলপাতা ও সামান্য অংশ টিন দিয়ে ছেয়ে ঘেরাবেড়া দেওয়া ঘরে বসবাস করে আসছেন। সংকীর্ণ জমির এককোনে ছোট্ট একটি আধা পাকা টিনের ছাউনি ঘর নির্মানাধীন আছে। ঝড়বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের সময় রীতিমত শঙ্কার মধ্যে জীবন হাতে নিয়ে বসবাস করেন তারা। কখনো কখনো নদীর পানিতে তলিয়ে যায় তাদের স্বপ্নের ঠিকানা। ‘মাছ না পেয়ে ছিপে কামড়’ প্রবাদটি তাদের জীবনে অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণসিদ্ধ হয়ে দেখা দিয়েছি। একখন্ড খাম জমি কেড়ে নিতে না পারা মানুষ এবং তাদের সহযোগিরা নানাভাবে দানব থাবা নিক্ষেপ করে যন্ত্রণা পীড়িত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে দেখা দিয়েছে, ভূমিহীন নেত্রীর স্বামী আমিরুলের চাকরী ক্ষেত্রে হলুদথাবা। ৮ম শ্রেণি পাশের প্রমান নিয়ে তিনি চাকুরীতে ঢুকলেও ৫ম শ্রেণি পাশের ঠুনকো দাবী তুয়ে ধুয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ডিসিআর নিয়ে খাস জমিতে গরীবি হালে বসবাস করলেও চর দখল করে বিলাস বহুল বাড়িতে বসবাসের প্রলাপ করা হচ্ছে। চাকুরি ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির দাবী করা হয়েছে। এমনকি ভূমিহীন নেত্রী মানুষের হৃদয়ের কাছে যাওয়ার প্রমাণ নিয়ে নির্বাচনী এলাকার সকল কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে মহিলা মেম্বার নির্বাচিত হলেও প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালান হয়েছে। এ ব্যাপারে মহিলা মেম্বার মারুফা খাতুন জানান, তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। ভূমিহীনদের থেকে টাকা গ্রহনে প্রতিবাদ করা, খাস জমি থেকে উচ্ছেদে ষড়যন্ত্র সফল না হওয়াসহ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ যে ষড়যন্ত্র করছে তা কোনদিন টিকবে না। তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা আইন আদালত, প্রশাসন, সচেতন মহল ও এলাকার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে যথাযথ জবাব দিতে সক্ষম হবো।