‘১৯ জুন থেকে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। প্রস্তুতি ছিল ভালই। কিন্তু সোবার রাতের কালবৈশাখীর ছোবলে উড়ে গেছে বাড়ী। ঝড়ের তান্ডবে উড়েছে বই। অবশিষ্ট যা ছিল তাও গেছে বৃষ্টির পানিতে ভিজে। এমন পরিস্থিতিতে কি করে পরীক্ষায় অংশ নিব। কুড়ে ঘরের ভিতর লেখা-পড়া করার যা পরিবেশ ছিল তাও গেছে ভেঙ্গে। এখন কি করে এসএসসির প্রস্তুতি নিব।’ কথাগুলো বলছিলেন নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের কাছারি দামপুরা গ্রামের পাশর্^বর্তী ঘুষিরা আদিবাসী পাড়ার পরমেশ^রের মেয়ে জামিতা। জামিতা এবার বরেন্দ্র একাডেমি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। কালবৈশাখীর ঝড়ে বাড়ি উড়ে যাওয়ায় ও পড়া বই ভিজে যাওয়ায় দিশেহারা সে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার জামিতার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, জামিতা রাস্তার ধারে তার ভেজা বইগুলো ঝড়ে উড়ে পড়া টিনের উপর মেলে দিয়ে রোদে শুকাচ্ছে। আর বাবা-মা ঘর মেরামতের কাজে ব্যস্ত। সোমবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে ওই গ্রামে আশ্রয়নের দুটি বাড়ীসহ উড়েছে অনেকের বাড়ী। সবাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ী মেরামতের কাজে ব্যস্ত।
কথা হয় জয়িতার বাবা পরিমেশ^রের সাথে। তিনি জানান, ঝড়ে গ্রামের প্রায় সকলের বাড়ি উড়লেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আসেনি কেউ। সকালে স্থানীয় মেম্বার আবদুল হাই বাবু এসে এক নজর দেখে চলে গেছেন। আর আসেননি তিনি। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে বাড়ী করেছি। মানুষের কাজ করে উপার্জিত টাকাই সংসার চালই ও ছেলে মেয়েদের পড়াই। এখন এতবড় ক্ষতিতে কি করে সব ঠিক করি। ঘরের সমস্থ টিন উড়ে দুমড়ে-মুচড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি নামলেই পরিবারের সকলকে নিয়ে ভিজতে হবে। ভিজবে ঘরের বিছানা-পত্র।
ওই পাড়ার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ফিলিপ জানান, ঘরের টিন উড়ে গেছে তার। মেরামত করার টাকা নেয়। সরকার সহায়তা না করলে খোলা ছাদের নিজেই থাকতে হবে তাদের ও বৃষ্টিতে ভিজতে হবে।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রসুলপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোতাল্লিব হোসেন বাবর জানান, তিনি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পাড়াটির কথা শুনেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যতটযকু সম্ভব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের প্রত্যেককেই সহযোগিতা করা হবে।
জানতে চাইলে ইউএনও’র দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) মঞ্জুরুল আলম জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের খোঁজ খবরসহ তালিকা নিচ্ছেন। বুধবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ীঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হবে।