ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুদকের মামলায় সোনালী ব্যাংক স্যার ইকবাল রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক খুলনার ম্যানেজার সুজিত কুমার মণ্ডলকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। আজ সোমবার মহানগর বিশেষ দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মাহমুদা খাতুন জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
দুদকের আইনজীবী খন্দকার মজিবর রহমান জানান, ২০১৫ সালে পাট ব্যবসায়ী সৌরভ ট্রেডার্সের মালিক মিতা ভট্টাচার্য গোডাউনে মজুদকৃত পাটের বিপরীতে সোনালী ব্যাংক থেকে চার কোটি ছয় লাখ টাকা প্লেজ ঋণ নেয়। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর গোডাউন থেকে পাট বের করার কথা থাকলেও ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও গোডাউন কিপারের যোগসাজসে এই পাট বিক্রি করে অর্থ আত্মসাত করা হয়। মামলায় একই সাথে সৌরভ ট্রেডার্সের মালিক মিতা ভট্টাচার্য ও গোডাউন ইনচার্জ নুরুল আমিনকেও আসামি করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংক খুলনার বিভিন্ন শাখা থেকে বিভিন্ন পাট ব্যবসায়ীরা সিসি ঋণ নিয়ে ব্যবসা করত। ব্যবসায়ীগণ সিসি ঋণ পাশ করিয়ে শুরু করে ব্যাংকের টাকা আতœসাতের নানা কৌশল। কাঁচা পাট সংরক্ষণের জন্য চুক্তিতে ভাড়া করা হয় বিভিন্ন পরিমাপের গুদাম। আর এ সকল সিসি ঋণ পাহারা দেওয়ার জন্য শুধু ব্যবস্থাপকই থাকেন না, থাকেন গোডাউন সুপারভাইজার, গোডাউন কিপার ও গোডাউন চৌকিদার। কাঁচা পাট ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের টাকা আতœসাত করার ফন্দি হিসেবে নানা কুট কৌশলে বেছে নেন। তাঁরা ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানা অবৈধ সুবিধা দানে হাত করে।
গুদামে কম পাট প্লেস দিয়ে বেশী দেখিয়ে বেশী পাট বিক্রি করে কম দেখিয়ে ব্যাকের টাকা আতœসাত করাহয়। তারই ধারাবাহিকতায় সোনালী ব্যাংকের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যাংককে করেছে দেওলিয়া। নিজেরা করেছে স্বনামে বেনামে মার্কেট, বাড়ি-গাড়ি। মাঝে মধ্যে দুই-এক জন আইনের হাতে ধরা পড়লেও অনেকে থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাঁদের ঋণ খেলাপির পরিমাণও কোটি কোটি টাকা।
আইনজীবী খন্দকার মজিবর রহমান জানান, অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুদক, খুলনার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- মহানগর বিশেষ ৫/২০। মামলা অপর দুই আসামি জামিনে মুক্তি পায়।