বিরলে বায়ার ক্রপ সায়েন্স এর অ্যারাইজ তেজ গোল্ড ধানের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাঠ দিবসে প্রায় শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ভান্ডারা ইউনিয়নের ভারাডাঙ্গী গ্রামে মাঠ দিবসে বায়ার ক্রপ সায়েন্স এর বিজনেস ম্যানেজার বীজ (নর্থ) এস এম তারিফ শাহারিয়ার, মোঃ ইমন, ট্রেড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোঃ কুদরত এ এলাহী সেলিমুল্লাহসহ বায়ার এর ঊর্ধ্বতন অফিসারবৃন্দ।
বিজনেস ম্যানেজার বীজ (নর্থ) এস এম তারিফ শাহারিয়ার বলেন, বায়ার এর গবেষণালব্ধ পাতাপোড়া রোগ (বিএলবি) প্রতিরোধী হাইব্রীড ধান অ্যারাইজ তেজ গোল্ড। এ ধান হতে লম্বা চিকন চাল, ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু এবং উফসী জাতের তুলনায় ফলন অনেক বেশী হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে বীজ ১০-১২ গন্টা বা সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হয়। বীজ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত করে নিয়ে ভিজা চটের ব্যাগ দিয়ে ৩৬-৪৮ ঘন্টা গজানোর জন্য জাগ দিতে হয়ে। বীজে পচা গন্ধ রোধে প্রতিদিন একবার বীজ ধৌত করতে হয়। প্রতি একরে ৬ কেজি বীজ প্রয়োজন। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত রোদ থাকে এমন মাঝারী উঁচু জায়গাতে বীজতলা তৈরী করতে হয়। প্রতি কেজি বীজের জন্য ১ শতক জমি প্রয়োজন হয়। বীজ বপনের পর বীজতলা ১/৪ ইঞ্চি পচা গোবর দিয়ে ভালভাবে ঢেকে দিতে হয়। চারার বয়স ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে হতে হবে। চারার বয়স যব বেশী হবে ফলন তত কমে আসবে। ২০ সে.মি. বা ৮ ইঞ্চি পর পর সারি করে প্রতি সারিতে ৬ ইঞ্চি বা ১৫ সে.মি. দুরত্বে একটি করে সুস্থ সবল চারা লাগাতে হবে যাতে প্রতি বর্গমিটারে ৩৩ টি গাছ থাকে। জমি তৈরির সময় শেষ চাষের বেলা প্রতি একরে (১০০ শতকে) ৩৫ কেজি ইউরিয়া, ৫১ কেজি টিএসপি, ৩০ কেজি এমওপি (পটাশ), ২৮ কেজি জিপসাম এবং ৬ কেজি জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপনের ২১ দিন পর প্রথমবার প্রতি একরে ৩৫ কেজি ইউরিয়া ও ৪২ দিন পর দ্বিতীবার ৩৫ কেজি ইউরিয়া এবং ১৮.৫ কেজি এমওপি (পটাশ) একত্রে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে নিয়মিত মাটি পরীক্ষা করে মাটির উর্বরতা জেনে নিতে হবে। চারা রোপনের সময় জমিতে ছিপছিপে (১-২ ইঞ্চি) পানি রাখতে হয়। জমিতে ৪০-৪৫ দিন পর্যন্ত ২-৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হয়। এরপর পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হয়। পারবর্তীতে গামুর বা কাইচ থোর হওয়া থেকে চাল শক্ত হওয়া পর্যন্ত পানি রাখতে হয়। চাল শক্ত হয়ে গেলে জমি থেকে পানি বের করে দিতে হয়। জমিতে পেেয়াজনে আগাছা, রোগ ও পোকা দমনের জন্য বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বালাইনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সহায়তা নিতে হয়। ফুল আসার ৩০-৩২ দিন পর শতকরা ৮৫ ভাগ ধান পেকে গেলে অর্থাৎ ধান সোনালী বর্ণ ধারণ করলে ফসল সংগ্রহ করতে হয়। সঠিক শস্য ব্যবস্থাপনা ও উপযুক্ত আবহাওয়ার উপর ফলন নির্ভর করে প্রতি হেক্টরে ৮৫০০-৯০০০ কেজি ফলন হয়।