মহামারী করোনা ভাইরাসের আক্রমণের কারণে দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে যাত্রী সাধারনের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি কার্যক্রম চালু হলেও সাধারণ মানুষ কোন ভাবেই যাতায়াত করতে পারছেন না। ফলে বিপুল অর্থ খরচ করে বিকল্প পথে হাজার হাজার কিঃ মিঃ পথ ঘুরে বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ কে ভারত গমন করতে হচ্ছে। এতে সব শ্রেনীর মানুষের যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি সরকারও বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই আমদানি রফতানী ব্যবসায় লোকসান ঠেকাতে দ্রুততম সময়ে এখানকার ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট খুলে দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সুত্রে জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের কারণে উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরটি গত ২০২০ সালের ১৮ মার্চ যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি পাথর আমদানি করলেও সীমিত আকারে আবার কয়লা আমদানি করা শুরু করা হয়। তবে মানুষ যাতায়াতের অনুমতি না থাকায় ব্যবসায়ীরা পরেছেন বিপাকে। পায়ে হাঁটা পথ পেড়িয়ে যেখানে ভারতের ব্যবসায়ীদের সাথে মুখোমুখি বসে আমদানি পন্যের গুনগতমান, দরদামসহ সকল বিষয়ে আলোচনা করতে পারতেন তারা, সেখানে কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ আর অতিরিক্ত টাকা খরচ করে এই বৈঠক করা আর হয়ে উঠছে না। অনেক সময় আমদানি পণ্যের গুনগত মানও বজায় থাকছে না। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে আমদানি রফতানীকারক ব্যবসায়ীদের। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের কার্যক্রম খুলে দেয়ার দাবী ব্যবসায়ী, ভ্রমণ পিপাসু ও সাধারন মানুষের। এ বন্দর দিয়ে অনেকেই ব্যবসা, ভ্রমন ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যাতায়াত করতেন। কিন্তু এখন ব্যবসায়ী, ভ্রমনপিপাসু ও চিকিৎসা সেবা প্রার্থীদেরকেও কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ ঘুরে ভারত যেতে সময় ও অর্থের অপচয় করতে হচ্ছে।
বন্দরের ব্যবসায়ী নিউ আল আমীন ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী নূরে আলম সিদ্দিকী জনি বলেন, এই বন্দর দিয়ে মানুষ চলাচল বন্ধ থাকায় দুই দেশের ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ আলোচনা করা যাচ্ছে না। ফলে আমরা ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানীকারক সমিতির সাধারন সম্পাদক অরুন চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। এ বন্দর দিয়ে মানুষ পারাপারের জন্য এখনই খুলে দেওয়া দরকার বলে তিনি জানান।
আমদানী রপ্তানীকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, সরাসরি ভারতের ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় নি¤œমানের পণ্য আমদানি হলে তাতে অভিযোগের সুযোগ থাকে না। ফলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তাই অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সার্বিক বিবেচনায় এই বন্দরটি দ্রুত খুলে দেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) পার্থ চন্দ্র ঘোষ জানান এই বন্দর দিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট খুলে দেওয়া হবে। তখন চিকিৎসা সেবাপ্রার্থী, ব্যবসায়ী ও ভ্রমন পিপাসুরা এই বন্দর দিয়ে সহজে ভারতে যেতে পারবেন। এনিয়ে প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।