মা আর ছোট বোনের সাথে ঢাকায় বেড়াতে গিয়েছিলো নয় বছরের আরাফাত হোসেন হাওলাদার। বেড়ানো শেষে আবার তাদের সাথেই ঢাকা থেকে সড়কপথে ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেয়রি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসছিলো।
পথিমধ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের সানুহার নামক এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আরাফাত জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফিরতে না পারলেও গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার মা আর ছোট বোন। মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই আরাফাত নিহত হয়েছে।
সোমবার সকালে শেবাচিম হাসপাতালে বসে নিহত আরাফতের মামা মেহেদী হাসান বলেন, গত সপ্তাহে তার বোন আঁখি বেগম (২৫) তার মামা শ্বশুরের ঢাকার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলো। তার সাথে ছিলো মেঝ ছেলে আরাফাত ও তিন বছরের শিশু কন্যা মরিয়ম। প্রায় এক সপ্তাহ সেখানে থাকার পর শনিবার (২৮ মে) দিবাগত রাতে রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যমুনা লাইনের বাসে চেঁপে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় আঁখি।
তিনি আরও বলেন, ২৯ মে দুপুরে বাস দুর্ঘটনার খবর জেনে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নিহত আরাফাতের মরদেহ শনাক্ত করি এবং শেবাচিম হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখি বেগম ও ভাগ্নি মরিয়মকে দেখতে পাই। তিনি বলেন, বোন ও ভাগ্নিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেখে রোববার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে আরাফাতের মরদেহ তার দাদা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বারবার ছেলেকে খুঁজছেন ও দেখতে চাচ্ছেন মা আঁখি বেগম। স্বজনরা আরাফাত ভালো আছে, হাসপাতালে থাকতে সমস্যা, তাই তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মিথ্যা শান্তনা দিয়ে রাখছেন।
শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আঁখি বেগমের সাথে থাকা তার মা মাহিনুর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, কীভাবে ওকে (আঁখি) জানাই আরাফাত মারা গেছে। তাকে মাটি দেয়াও হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত দুইদিনে তার মেয়ে আঁখি বেগম এখনও জানেনা তার বুকের মানিক আরাফাত আর বেঁচে নেই।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেয়রি গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা ওমান প্রবাসী মনির হাওলাদারের স্ত্রী আঁখি বেগম। ২৯ মে ভোরে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের উজিরপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় আঁখি বেগমের ছেলে আরাফাত নিহত হন।