নীলফামারীর সৈয়দপুর প্লাজা পাল্টে দিয়েছে সৈয়দপুরের পরিবেশ। আর এ সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছে এক শ্রেণীর ধান্ধাবাজ ব্যবসায়ি। তারা তাদের ব্যবসার আড়ালে করে যাচ্ছে নানান অপকর্ম। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের বেড়াজাল ভেঙ্গে আধুনিক সুপার মার্কেট সৈয়দপুর প্লাজা নির্মিত হয়।
এটি যাতে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে সে জন্য প্রায় প্রতিদিনই শহরে চলছিল একটি অপগোষ্ঠির মিটিং মিছিল। শেষ মেষ ওই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে ছাই পড়ে। গড়ে ওঠে বিশাল ভবন। এখন দুই পাশে দুইটি বিশাল বিশাল ভবন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ দুটির নামকরণ করা হয়েছে একটি অত্যাধুনিক সুপার মার্কেট সৈয়দপুর প্লাজা অন্যটি সৈয়দপুর এস আর প্লাজা। তৃতীয় ও চতুর্থ তলা করে দুইটি ভবন শোভা পাচ্ছে শহরে।
এ দুই ভবনে প্রায় এক হাজারের বেশী দোকান রয়েছে। দোকানগুলো দেয়া হয়েছে এককালীন বরাদ্দ। এতে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়িরা। যারা একটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন ৩ লাখ টাকা তারা ওই দোকান এখন বিক্রি করছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তাছাড়া সৈয়দপুর শহরে ছিল না কোন ভাল মার্কেট। কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে রেলওয়ে ঝুপড়ী মার্কেটে ক্রেতারা তাদের প্রয়োজন সারতো।
সৈয়দপুরের উন্নত পরিবেশ। নান্দনিক একটি মার্কেট ছিল খুবই প্রয়োজন। আর এ দিকগুলো মাথায় নিয়ে ভাবতে থাকেন সৈয়দপুরের ব্যবসায়ি পরিবারের সন্তান সমাজসেবক ও ব্যবসায়ি আলহাজ¦ গুলজার আহমেদ। তিনি সৈয়দপুরের উন্নয়নে ঢাকার শিল্পপতি আলহাজ¦ সামশুল হক ভুইয়ার স্বরণাপন্ন হন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েক মাস ধরে আলাপ আলোচনা করেন। এক পর্যায় গুলজার আহমেদ এর সাথে ঢাকার ওই শিল্পপতি সামশুল হক ভুইয়া একমত পোষন করেন। সে থেকে শুরু হয় মার্কেট নির্মাণ পদ্ধতি। আজ মার্কেট হল। বেশ জমে উঠলো প্লাজা। মানুষ স্বাচ্ছন্দে এ প্লাজা মার্কেটে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করছেন।
আর এ মার্কেটের সুনাম ক্ষুন্ন করতে কতিপয় লোভী ব্যবসায়ি প্লাজার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় শুরু করে ফাস্ট ফুড ব্যবসা। বর্তমানে বেশ কয়েকটি দোকান চালু রয়েছে। দোকানগুলোতে থাকে অল্প আলো। অনেকটা অন্ধকার। কোন ভদ্রলোক এমন পরিবেশে দোকানগুলোতে আসার কথা না। তবে ব্যবসায়িদের লক্ষ্য তাদের দোকানে ভদ্রলোকের প্রয়োজন নেই।
তাদের টার্গেট উঠতি বয়সী ছেলে মেয়ে। এখানে অনৈতিক কাজের সুযোগ থাকায় সকাল,দুপুর,বিকেল ও রাতে থাকে অত্যন্ত ভীর। সময় হিসেবে টাকা নেয়া হয়ে থাকে। তাতে নিম্ন হলেও এক জোড়ার কাছ থেকে সময় ও খাওয়া মিলে ৪শ টাকার নিচে না। এভাবে প্লাজার প্রায় বেশ কয়েকটি ফাস্ট ফুড দোকানে চলে অনৈতিক কাজ। থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান থেকে বেশ কয়েক বার কপোত কপোতী আটক করে। জেল জরিমানাও দেয়া হয়।কিন্তু তারপরও প্লাজায় ওই সকল অপকর্ম বন্ধ না হয়ে আরো বেড়ে যায়। অনেকটা জমজমাট ব্যবসা।
প্লাজা ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আরশেদ আলো জানান, কতিপয় ব্যবসায়ি এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত থাকায় প্লাজার সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ গুলো বন্ধ হওয়া দরকার।
বাংলাদেশ কৃষকলীগ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ও ব্যবসায়ি আবদুস সবুর আলম বলেন প্লাজায় অপকর্ম হচ্ছে। এতে গোটা প্লাজার বদনাম হচ্ছে। ভাল মানুষ আর প্লাজায় আসতে চায় না।
সৈয়দপুর প্লাজার প্রকল্প ডিরেক্টর আলহাজ¦ গুলজার আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে কতিপয় ব্যবসায়ি এ কাজগুলো করছে। এরা পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল জরিমানা দিচ্ছে। তারপরও ওই সকল কাজ বন্ধ করছে না। তবে এ ব্যাপারে প্লাজা কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
সাংবাদিক আশরাফুল হক বলেন সকালে এলে প্লাজার বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ে ফেনসিডিলের খালি বোতল। দুপুর ও বিকেলে প্লাজায় পাওয়া যায় গাজার গন্ধ। এদিকে সাধারণ মানুষ প্লাজার ওই সকল অনৈতিক কাজ বন্ধের দাবি তোলেন। সাথে যারা এ সকল কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার অনুরোধ জানান।