উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত কোন আদেশ ছাড়াই সোনালী ব্যাংক শাখাগুলো থেকে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহনকারীদের হিসাব ক্লোজ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে হিসাব ক্লোজ করে নেওয়ার বিষয়টি ওই গ্রাহককে আদেও জানানো হচ্ছেনা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছেন ১২ বছরের অধিককাল অব্যবহৃত হিসাব গুলোই সবেমাত্র ক্লোজ করা হচ্ছে। তবে এটি করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। আর এ বিষয়টি নিয়ে শাখা ব্যবস্থাপকদেরকে ভাবিয়ে তুলেছেন।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক মণিরামপুর, চিনাটোলা এবং রাজগঞ্জ শাখার মাধ্যমে উপজেলার ৪৫ হাজার ১৯৮ জন ব্যক্তি বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা উত্তোলন করে থাকেন তাদের নিজস্ব হিসাব নম্বর থেকে। হঠাৎ করে গ্রাহকদের না জানিয়ে তাদের এ হিসাবগুলো ক্লোজ করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সূত্রমতে, মণিরামপুরের সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখার মাধ্যমে ২৫ হাজার ৫১৯ জনকে বয়স্ক ভাতা, ১২ হাজার ৬৪৮ জনকে বিধবা ভাতা এবং ৭ হাজার ৩১ জনকে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা হতো। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এসব ভাতা ভোগীদের হিসাব নম্বর ক্লোজ করা হচ্ছে তা ওই গ্রাহকদের আদেও জানানো হচ্ছেনা।
উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, এখন থেকে এসব ভাতা ভোগীরা তাদের ভাতার টাকা পাবেন ব্যাংক এশিয়ার শাখা গুলোর মাধ্যমে। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা জানান, এসব হিসাবগুলো ডিজিটালাইজ করা হয়েছে এ কারণেই কর্তৃপক্ষ এটিকে ব্যাংক এশিয়া’তে দিয়েছেন।
এদিকে সোনালী ব্যাংক শাখাগুলো কোন আইনে গ্রাহকদের হিসাব ক্লোজ করছেন তা নিয়ে নানামুখী প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে এসব ব্যাপারে শাখা ব্যবস্থাপকরা স্পষ্টতো কিছুই বলতে পারছেননা। কেবলমাত্র তারা জানাচ্ছেন হিসাবগুলো স্বচল থাকছে। তবে জিরো ব্যালেন্সের এবং অব্যবহৃত হিসাবগুলো ক্লোজ করা হচ্ছে।
সোনালী ব্যাংক মণিরামপুর শাখার ব্যবস্থাপক পলাশ মাহমুদ-এর নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনিও স্পষ্ট কিছুই বলতে পারেননি। তিনি জানান এসব গ্রাহকদের আগে হিসাব খোলা ছিলো কুইক ওপেনিং হিসেবে। বর্তমানে এগুলোর আপডেট করা হচ্ছে।
সোনালী ব্যাংক চিনাটোলা শাখার ব্যবস্থাপক তারক দেবনাথ এ ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে রাজি হননি। সোনালী ব্যাংক রাজগঞ্চ শাখার ব্যবস্থাপক ই¯্রাফিল হোসেন বলেন, গ্রাহকদের না জানিয়ে তার হিসাব ক্লোজ করা হচ্ছেনা।
তবে, এসব বিষয়ে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে যশোর অঞ্চলের প্রধান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) দিবেন্্ুয দাস বলেন, কোন হিসাব ক্লোজ করতে হলে অবশ্যই ওই গ্রাহককে অবহিত করতে হবে। এমনকি চলমান গ্রাহকের হিসাব ক্লোজ করা হচ্ছেনা। মুলতো এটা কেওআইসি আপডে করা হচ্ছে। হিসাব ক্লোজ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন লিখিত আদেশ আছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, লিখিত কোন পরিপত্র বা নির্দেশনা নেই। মৌখিক নির্দেশনা মোতাবেক যশোরের সকল শাখা ব্যাপস্থাপককে কেওআইসি আপডেট করতে বলা হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড যশোর অঞ্চলের অনুমোদিত আইনজীবী এ্যাড. হাই মোল্ল্যা জানান, কোন স্বচল হিসাবগুলো ক্লোজ করতে হলে গ্রাহকের লিখিত আবেদন বা আদলতের আদেশ অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ ছাড়া সম্ভব কিনা আমার জানা নেই। আমরা শুধুমাত্র জমিজমা বিষয়ে দেখভাল করি।