‘চা দিবসের সংকল্প, সমৃদ্ধ চা শিল্প’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার (৪ জুন) দ্বিতীয়বারের মতো শ্রীমঙ্গলেও জাকঁজমকপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপিত হয়েছে।
জাতীয় চা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ সকাল ১০ টায় শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০ টায় ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসের টি টেস্টিং কক্ষে দিনব্যাপী চা প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সন্ধীপ তালুকদার ও শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো: শহীদুল হক মুন্সী।
সকাল ১১ টায় ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স হলে জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবদুল আজিজ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানিয়া সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী।
চা বোর্ড সূত্র জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেছিলেন। তাঁর প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় ১৯৫৭ সালে শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ঢাকার মতিঝিলে চা বোর্ডের কার্যালয় স্থাপিত হয়। চা শিল্পে জাতির পিতার অবদান এবং চা বোর্ডে যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৪ জুনকে জাতীয় চা দিবস ঘোষণা করা হয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে গত বছর প্রথমবারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপন করা হয়।
চা বোর্ড সূত্র জানায়, আজ জাতীয় চা দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে দেশের চা উৎপাদনকারী অঞ্চল চট্টগ্রাম, শ্রীমঙ্গল, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটসহ ঢাকায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় চা দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
চা বোর্ড সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে উত্তরবঙ্গে চা শিল্পের প্রসারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ফলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলায় চা আবাদ সম্প্রসারিত হয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও চা আবাদ শুরু হয়েছে। এসব জেলায় চা আবাদ মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ফলে চা শিল্প আজ টেকসই এবং মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষদ্রায়তন চা বাগান থেকে রেকর্ড পরিমাণ ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এরমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ ১৪.৫৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।