বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, জনগণকে সাথে নিয়ে ষড়যন্তকারীদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হবে। ষড়যন্তকারীরা ভেবেছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, বন্দুকের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করে দেশকে পাকিস্তান বানাবে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। শনিবার সকাল ১১টায় কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, খুনি জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া এদেশের জনগণের উপর জগদ্দল পাথরের মত বসেছিল। বিএনপি বিদেশীদের সাথে প্রভুর সম্পর্ক করেছিল কিন্তু শেখ হাসিনা বিদেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। পদ্মা সেতু নিমার্নের ফলে যে আয় হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৩% প্রবৃদ্ধি হবে। আজ আমাদের কাছে পরিস্কার শেখ হাসিনা মানে বাংলাদেশের সম্মান, উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব। তিনি বলেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ছয়দফা দাবী তুলে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল। তিনি আরো বলেন, বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ভারত হয়ে যাবে, মসাজিদে ওলুধ্বনি হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি বরং বালাদেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ হচ্ছে। বিএনপির হাওয়া ভবনের কর্নদ্বার সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া লন্ডনে বসেই নানা ধরণের সড়যন্ত্র করেন। ফখরুল সাহেবরা ঢাকায় বসে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো নাচা-নাচি করেন। মনে রাখবেন বাংলাদেশে আর ১৫ ও ২১ আগস্ট হবে না। আর এমন স্বপ্ন দেখবেন না।
কসবা টি. আলী ডিগ্রী কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর সভা থেকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও বর্ণিল পোশাকে মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। একপর্যায়ে সভা শুরুর পূর্বেই সভাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র সভাপতিত্বে কসবা টি. আলী ডিগ্রী কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি, এবাদুল করিম বুলবুল এমপি, এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি ও উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ) এমপি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কসবা পৌর সভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী। এ সময় সম্মেলনের কাউন্সিলর, কসবা পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বত্তব্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মামুন স্বপন এমপি বলেন, একটি মানুষকে আজ শ্রদ্ধা না জানালে ভুল করা হবে। সেই মানুষটি হলেন মরহুম অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক। যিনি সেদিন খুনি মোশতাকের মন্ত্রী সভায় যোগ দেয়ার আহ্বান ঘৃনাভরে প্রত্যাক্ষান করে মোশতাককে মুখের ওপর তিরস্কার করেছিলেন। তিনি আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের পিতা মরহুম সিরাজুল হক। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিশেষ কুশলী হিসেবে বিচার প্রকিয়াকে তরান্বিত করেছেন। আবু সাঈদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেশ চালায় না। তারঁ বলিষ্ট নেতৃত্বে সকল চক্রান্তকে মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু নির্মান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। তিনি তার তিন বছরের শাসনামলে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জামাতকে ছাড় দিয়ে তার পরিবারের ১৭ জন প্রাণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বিশে^র দরবারে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে তাদের আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে। পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করেছিল যেন সেতু না হয়। সেসময় ড. ইউনুছ বিশ^ ব্যাংকে গিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধীতা করেছিল। বিশ^ ব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার পরও জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি’র সঞ্চালনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি’র সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুিষ্ঠত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিকল্প কোন প্রার্থী না থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপিকে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. রাশেদুল কাওসার ভূইয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।