স্ত্রীকে হত্যার দায়ে শেরপুরে এমদাদুল হক লালু (৪৫) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এমদাদুল হক সদর উপজেলার চরমুচারিয়া ইউনিয়নের মুকসুদপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
শেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১০ সালে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘড়িপাড়া এলাকার আবদুর রশিদের মেয়ে রোকসানা খাতুনকে বিয়ে করেন এমদাদুল হক। বিয়ের পর রোকসানার বাবা জামাইকে আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার দেন। বিয়ের প্রায় পাঁচ বছর পর এমদাদুল হক চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। পরে যৌতুক দাবিতে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রোকসানাকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করেন স্বামী এমদাদুল। পরে মুখে বিষ ঢেলে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রোকসানা। এই ঘটনায় প্রথমে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়। পরে ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিষ খেয়ে নয় মারপিটে জখমের কারণে মারা গেছেন রোকসানা। পরে ওই ঘটনায় রোকসানার ভাই ডা. গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে এমদাদুল হক লালু, এমদাদুলের ভাই ও ভাবিসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আসামি এমদাদুল হক লালুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বাদী, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক) ধারায় আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আসামি এমদাদুল হক লালুকে এই দণ্ড দেন আদালত।