কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে ব্রহ্মপুত্র ও জিঞ্জিরাম নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বেশীর ভাগ নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমন বীজতলা বিআর, ৪২, ৮২ জাতের বোরো ধান, সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পরার আশঙ্কা কৃষক। পানি বান্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ।
উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ধর্মপুর, ছাটকড়াইবাড়ি, খেতারচর, গাছবাড়ি, ইটালুকান্দা, কাউনিযার চর, কাজাইকাটা. শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া, বোয়ালমারী, বেগুলারচর, চৎলাকান্দা, টালুয়ারচর, ঝুনকিরচর, রৌমারী ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, নটানপাড়া (আমবাড়ী), চান্দারচর, ইজলামারি, চরইজলামারী, মাদারটিলা, চর ইছাকুড়ি, বড়াইবাড়ী, চুলিয়ারচর, ঝাউবাড়ি, পাটাধোয়া পাড়া,বাওয়ার গ্রাম, ধুবলাবাড়ি, বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইসপাড়া, ফলুয়ারচর, বাঘমারা, বলদমারা, যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর, খেওয়ারচর, নামাবকবান্দা, দক্ষিন আলগারচর, চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা, পাখিউড়া ধনারচর নতুন গ্রাম। চর শৌলমারী ইউনিয়নের চর ঘুঘুমারী, খাউরিয়া, সুখের বাতিসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
মাদার টিলা গ্রামের আবু সাঈদ বলেন, বোরো ধান কাটা শেষ না হতেই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় নিম্নাঞ্চল। আমি শরিষা তুলে যে ধান রোপণ করেছিলাম তাতে দেরি হয়েছিলো। দেরিতে রোপণ করায় সে ধানগুলোর ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক ধান তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হয়েছি। বৃষ্টির মধ্যে কোনরকম ধান কাটতে পারলেও খড়গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন গরু খাদ্য নিয়েও বিপাকে আছি।
মন্ডলপাড়া গ্রামের আবদুল কাইয়ুম বলেন, ভারি বর্ষণে ও বন্যায় আমার এক বিঘা জমির সব্জি বাগান নষ্ট হয়েছে। এতে আমার বড় মাপে ক্ষতি হলো। এর প্রভাব পরবে কাঁচা বাজারে। একই কথা বলেন, উত্তর পাড়া গ্রামের আবুল হাসেম, আবদুর রাজ্জাক। ইছাকুড়িগ্রামের ছলিম উদ্দিন বলেন, আমি ভুট্টা তুলে ৩ বিঘা জমিতে ৪২ জাতে ধান রোপণ করে ছিলাম। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন আমার মত যারা প্রতিবছরের মত এ জাতের ধান লাগিয়েছেন তারা সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ভারি বর্ষণে অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেলেও কৃষকের তেমন ক্ষতি হয়নি। বেশির ভাগ কৃষক আগেই ধান কেটে ফেলেছে। তবে অনেক কৃষকের নমল জাতের কিছু ধান ও গরুখাদ্য, আমন বীজতলা, ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঅঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। তবে এ বন্যায় তেনম কোন ক্ষতি হয়নি মানুষের। আমরা নিবির ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তেমন কিছু হলে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।